স্বদেশ ডেস্ক: মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গুলি করো। এমন নির্দেশ পেয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মিয়ানমার পুলিশের ল্যান্স কর্পোরাল থা পেং। কয়েকবার সেই নির্দেশ অমান্য করে তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজেই এ কথা জানিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে। থা পেং বলেছেন, গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারি খামপাত শহরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাবমেশিনগান থেকে গুলি করতে নির্দেশ দেয়া হয়। সেদিন তিনি নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন। তার ভাষায়, পরের দিন একজন অফিসার আমাকে নির্দেশ দিয়ে বললেন, তুমি কি গুলি করতে পারবে? ২৭ বছর বয়সী এই ল্যান্স কর্পোরাল এমন নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর পুলিশ বাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা গত ১লা ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে নেত্রী অং সান সুচি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট সহ শীর্ষ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে। তারপর থেকে অব্যাহত বিক্ষোভে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২ জন মারা গেছেন। সামরিক জান্তা বলেছে, তারা সর্বোচ্চ সংযত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তারা পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী এবং স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে হামলা করছে। কিন্তু পলাতক পুলিশ কতর্মকর্তা পেং যে দাবি করেছেন, তাতে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে গিয়ে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। শুধু পুলিশ সদস্য নন, মিয়ানমারের কমপক্ষে ১০০ মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্য। এর মধ্যে কয়েকজন আশ্রয় নিয়েছেন মিজোরামের চামপাই জেলায়। সেখানে মিয়ানমারের তিন নাগরিকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে রয়টার্স। তারা পুলিশে চাকরি করতেন। এ সময় থা পেং তার আইডি কার্ড দেখানো ছাড়াও নিজের একটি ছবি দেখিয়েছেন পুলিশের ইউনিফর্ম পরা। তিনি জানিয়েছেন ৯ বছর আগে পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। তার মতে, পুলিশি নিয়ম অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ছুড়ে অথবা হাঁটুর নিচে গুলি করার নিয়ম আছে। কিন্তু তাকে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল মারা না যাওয়া পর্যন্ত গুলি করতে।
নগুন হ্লয়েই পুলিশের কনস্টেবল। তিনি মান্দালয়ে অবস্থান করছিলেন। তাকেও গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে কবে এটা ঘটেছিল তা তিনি বলতে পারেননি। কোনো ব্যক্তিকে তিনি গুলি করে হত্যা করেছেন কিনা তা জানা যায় নি। তিনি এবং থা পেং বলেছেন, তারা মনে করেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্দেশেই তাদেরকে গুলি করতে আদেশ দেয়া হয়েছে। একই রকম কথা বলেছেন অন্যরাও।