স্বদেশ ডেস্ক: ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। তেহরান জানিয়েছে, তারা অনেক চেষ্টা করেও চুক্তি রক্ষা করতে পারেনি, তাই নিজেদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু করেছে। একই সঙ্গে চুক্তিতে থাকা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে এর জন্য দায়ী করেছে। খবর বিবিসি।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরকচি গতকাল রবিবার বলেন, ইরান এখনো চায় চুক্তিটি থাকুক; কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিজেদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। চুক্তিটি থেকে ২০১৮ সালে বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তেহরানের ওপর পূর্বের সব অবরোধসহ নতুন অবরোধ আরোপ করে ওয়াশিংটন। চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার বর্ষপূর্তির দিনে ইরান চুক্তিবদ্ধ অন্য পাঁচ দেশের জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
দেশগুলো হলো-চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া। গতকাল রবিবার সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আব্বাস আরকচি বলেন, ইরান ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের চেয়ে বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ শুরু করেছে। তবে একই সঙ্গে আরকচি এটিও বলেন যে, আলোচনার জন্য এখনো দরজা খোলা রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে চুক্তি অনুযায়ী-৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম মজুদের অনুমোদন ছিল। কিন্তু চুক্তি লঙ্ঘনের ঘোষণার সঙ্গে এই মাত্রা বাড়িয়েছে ইরান।
এর আগে ইরান জানিয়েছিল তারা ৫ শতাংশ ইউরেনিয়ম মজুদ করবে। তবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে অন্তত ৯০ শতাংশ ইউরেনিয়াম মজুদ করতে হবে। এদিকে পারমাণবিক চুক্তি রক্ষায় ইইউ কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে কয়েক মাস থেকেই ইরান অনুযোগ করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত চুক্তি ভঙ্গের ঘোষণায় তাদের টনক নড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, তিনি শিগগিরই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন শর্ত নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রন। একই সঙ্গে ইউরোপের অন্যপক্ষের সঙ্গেও তিনি এ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
ইরান সব সময় বলে এসেছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে শান্তিপূর্ণ। তারা কখনো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের কথায় আস্থা রাখতে পারেনি। ইরানের চুক্তি ভঙ্গের ঘোষণায় ইসরায়েল বলেছে-ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকে যাচ্ছে।