স্বদেশ ডেস্ক:
রাজধানীর দারুস সালাম থানার সরকারি বাঙলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গরুর ট্রাক থেকে জব্দ করা হয় ৩৭ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা। গ্রেপ্তার করা হয় এক ইয়াবাকারবারিকেও। আর দশটা অভিযানের মতো সবই ঠিকই ছিল। বিপত্তি বাধে এ ঘটনায় দায়ের মামলার জব্দ তালিকা নিয়ে। কেননা ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির টাকা এবং ট্রাকের সঙ্গে ছিল চারটি গরুও। এগুলো লালন-পালনের সরকারি কোনো ব্যবস্থা নেই যে র্যাব-পুলিশে। তাই সমস্যার বিষয়টি জানানো হয় আদালতকে। পরে বিচারকের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ২ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয় সেই চারটি গরু।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৮ ডিসেম্বর মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের সামনের সড়কে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৪। এ সময় গরুবোঝাই একটি কার্গো ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে জব্দ করা হয় ৩৭ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা। গ্রেপ্তার করা হয় কক্সবাজারের বাসিন্দা ইয়াবাকারবারি ইউনুসকে। সেই সঙ্গে কার্গো ট্রাক, চারটি গরু ও ইয়াবা বিক্রির ১২ হাজার ৯২০ টাকাও জব্দ করে র্যাব।
র্যাব জানায়, ইউনুস দীর্ঘদিন ধরে গরু ব্যবসার আড়ালে পাচার করছিলেন ইয়াবা। কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলা থেকে গরুর ট্রাকে করে ইয়াবার চালান ঢাকায় আনতেন তিনি। পরে ঢাকার সিন্ডিকেটের অন্যদের কাছে পৌঁছে যেত মাদকের চালানগুলো। এ বিষয়ে রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ইউনুস। সিন্ডিকেটের অপর সদস্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে র্যাব।
এদিকে গরুর মালিককে শনাক্ত করতে দেশের সব থানায় বেতার বার্তা পাঠায় পুলিশ। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। পরে উপায়ন্তর না দেখে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আসাফুদ্দৌলা সরদার ঢাকার সিএমএম আদালতকে বিষয়টি জানান। এটিও জানানো হয়, থানা এলাকায় গরু লালন-পালনের কোনো সরকারি খোঁয়াড় নেই। এ ছাড়া গরু রাখা এবং পরিচর্যার ব্যবস্থা নেই র্যাব কার্যালয়েও। শীতের সময় নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে গরুগুলোর। তাই এগুলো নিলামে বিক্রি করে সেই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রাখার আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের নির্দেশনা মেনেই গত শুক্রবার র্যাব কার্যালয়ে গরু নিলামের আয়োজন করা হয়। দুজন ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে চারটি গরু বিক্রি হয় ২ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকায়। পরে সেই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ইয়াবার চালানের সঙ্গে জব্দ ১২ হাজার ৯০০ টাকাও রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আসাফুদ্দৌলা সরদার আমাদের সময়কে বলেন, ‘গরু চারটি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। উত্তরার এক ব্যবসায়ী সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সেগুলো কিনে নিয়েছেন।’ র্যাব ৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ীই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গরুগুলো বিক্রি করা হয়েছে।’