সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন

পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচন: সবার টার্গেট দলীয় প্রতীক

পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচন: সবার টার্গেট দলীয় প্রতীক

স্বদেশ ডেস্ক: ভোট কিংবা ভোটার। প্রার্থীদের কাছে এখন দু’টিরই গুরুত্ব কম। দলীয় মনোনয়নই মুখ্য তাই উপজেলা থেকে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আর্কষণে ব্যস্ত তারা। কারণ দলীয় মনোনয়ন পেলেই জয় নিশ্চিত এমন ধারণা অনেক প্রার্থীর। এমন বিশ্বাসে এখন রাত দিন প্রাণপণ ছুটছেন প্রার্থীরা। এ কারণে প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের আমেজ থাকলেও ভোটারদের মাঝে তা নেই। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা পৌরসভার নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেও অপেক্ষমাণ অন্য ৪টি পৌরসভা। আর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত না হলেও বসে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে ঠিকে থাকতে মৌলভীবাজারের ৫টি পৌরসভা ও ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় ৫ সহস্রাধিক প্রার্থী এখন থেকেই শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। শুরু হয়েছে ভোটের আগে প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধ। প্রার্থীদের কাছে এখন ভোটারদের চাইতে কদর বেড়েছে দলীয় নেতা ও স্থানীয় কর্মীদের। ভোটের আগে মনোনয়ন যুদ্ধে যিনি জয়ী হবেন তিনিই এগিয়ে থাকবেন এমনটিই মনে করছেন প্রার্থীরা। ডিসেম্বর ও মার্চে সম্ভাব্য পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে সরব প্রার্থীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের  ছবি ও শুভেচ্ছা সংম্বলিত ব্যানার- ফেস্টুন আর বিলবোর্ড টানানো হচ্ছে শহর ও স্থানীয় হাট বাজারের লোক-সমাগম স্থলে। এছাড়া প্রার্থীদের নিজেদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা সংশ্লিষ্ট পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা সংবলিত লিফলেট আগাম ছেপেও বিলি করেছেন কেউ কেউ। তবে প্রার্থীর তৎপরতা ভোটারকে ঘিরে নয়। ভোটের মাঠে ঠিকে থাকতে দলীয় নেতাদের আশীর্বাদ পেতে প্রার্থীদের আগাম দৌড়ঝাঁপ। কারণ দলীয় নেতারা খোশ হলেই দলের মনোনয়ন পাবেন। আর দলের মনোনয়ন পেলেই দলীয় ভোটও পাবেন। বিজয়ী হবেন এমনটি ধারণা প্রার্থীদের। তাই এখন থেকেই তৃণমূল থেকে উপজেলা, জেলা এমনকি কেন্দ্র পর্যন্ত দলীয় নেতাদের মন জয় করতে প্রার্থীরা ছুটছেন রাত-দিন। কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন নেতাদের সাথে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক, আত্মীয়তা কিংবা ব্যক্তি সম্পর্ক। নেতাদের অবগত করছেন সংগঠনের জন্য নিজের অবদান। স্থানীয় হাট-বাজারের হোটেল ও রেস্তোরাঁতে চায়ের কাপে ঝড় তোলা আলোচনায় ভোট আর প্রার্থীর চাইতে মুখ্য বিষয় হিসেবে স্থান পাচ্ছে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন নিয়ে। হঠাৎ করে গেল নির্বাচন থেকে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নের সরকারি সিদ্ধান্তে পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা তর্কযুদ্ধ। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রিয় অনেক জনপ্রতিনিধি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনকে মানতে পারছেন না। তারা অনেকেই জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী হওয়াসত্ত্বেও স্থানীয় নির্বাচনে তারা ভোটারদের মন সহজেই জয় করে নেন। তারা জানালেন, স্থানীয় এ নির্বাচনগুলোতে যোগ্যতার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের ভোট দেন ভোটাররা। ওখানে প্রার্থীর নিজ যোগ্যতা ছাড়াও বংশ ও গোষ্ঠীগত মর্যাদা ও প্রভাব, এলাকা ও অঞ্চল প্রীতি ইত্যাদি নানা বিষয়ই আকৃষ্ট করে স্থানীয় ভোটারদের। দলীয় প্রভাব থাকে খুবই কম। উৎসবমুখর পরিবেশেই একদলের নেতাকর্মী ও সর্মথক অন্যদলের প্রার্থীদের ভোট দেন। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচন ছাড়া তৃণমূলের কর্মীরাও স্থানীয় এ নির্বাচনগুলোতে প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় কিংবা প্রতীকে নির্বাচন করতে তেমন আগ্রহী নয়। তাদের ধারণা এতে করে দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সংঘাত গ্রাম পর্যায়ে চলে আসে। জেলার ৫টি পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর এবং ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য প্রায় ৫ সহস্রাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। আসছে ডিসেম্বরে জেলার বড়লেখা পৌরসভা দিয়ে শুরু হবে নির্বাচন। তবে দলীয় প্রার্থীরা নিজ দলের মনোনয়ন পেতে দৌড়যাপ শুরু করলেও বসে নেই  নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তারা  আগের মতোই ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করে দোয়া চাইছেন। দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে নিচ্ছেন সুশীল সমাজসহ ভোটারদের পরামর্শ। তবে স্থানীয় এই নির্বাচন নিয়ে সরকার দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আর প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ লক্ষণীয়। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট  ও জোটবদ্ধভাবে পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তারপরও বসে নেই দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ধারণা দলের হাইকমান্ড শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নাও নিতে পারে। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিগত দিনে এ জেলার বিএনপি, জামাতসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নামে অসংখ্যা মামলা হয়েছে। ওইসব মামলায় পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের হয়রানির আশংকাও রয়েছে নেতাকর্মীদের। তারপরও দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করছেন দলের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877