স্বদেশ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ভবন নির্মাণে ৭৫ কোটি টাকার কাজ জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত কথিত সাবেক যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও তার সহযোগী আরেকটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার সকালে এ তথ্য জানান দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন। তিনি বলেন, দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে রোববার (২২শে নভেম্বর) বিকেলে মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযুক্ত মো. গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীম ঢাকার জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সমবায় সম্পাদক ছিলেন। আরেক অভিযুক্ত মো. ফজলুল করিম চৌধুরী দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবীর চন্দন বলেন, জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণের কাজ নেন জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানসহ দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ একাডেমিক ভবনের (২য় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ) ২য় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করে।
একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ অভিযোগটি অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন, চবি কর্তৃক আহ্বান করা দরপত্রের শর্ত পূরণ করার মতো নির্মাণ কাজের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাজটি ভাগিয়ে নেন তারা।
প্রসঙ্গত, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে গত বছরের ২০শে সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় র্যাব। ওই ভবন থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে। জি কে শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের হাতে সরকারি প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ ছিল। পরে সেগুলোর কার্যাদেশ বাতিল হয়। শামীমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ছাড়াও অস্ত্র ও মাদক আইনে আরও দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে অর্থ পাচার ও অস্ত্র মামলায় বিচার শুরু হয়েছে।