বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন

জীবন সংগ্রামে হার না মানা যোদ্ধা শেফালী…!

জীবন সংগ্রামে হার না মানা যোদ্ধা শেফালী…!

স্বদেশ ডেস্ক: ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত দোগনা বাজারের নরসুন্দর শেফালী রানী শীল (৫০) প্রায় দেড় যুগ ধরে এলাকার লোকজনের চুল কাটছেন, মুখ শেভ করে দিচ্ছেন। জীবন সংগ্রামে হার না মামা শেফালী প্রতিদিন সকালে চুল কাটার যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির হন বাজারের এক প্রবাসীর ঘরের বারান্দায়। সেখানেই তিনি নরসুন্দরের কাজ করেন। তার কাছে শিশু-কিশোর, তরুণ-বৃদ্ধ সবাই নিজেদের রুচি অনুযায়ী চুল কাটাতে মাথা পেতে দেন নিশ্চিন্তে। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শেফালীর বিয়ে হয় দোগনা বাজারের পাশের গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ শীলের সঙ্গে। স্বামী বিশ্বনাথ শীলের দোগনা বাজারে সেলুন ছিল। তার আয় দিয়ে সংসার চলত। এরপর একে একে শেফালী ও বিশ্বনাথের ঘরে জন্ম নেয় চার মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান। প্রায় দেড় যুগ আগে জটিল রোগে আক্রান্ত হন বিশ্বনাথ। বন্ধ হয়ে যায় শেফালীর সংসারের আয়। নিজের চিকিৎসা ও সংসারের খরচ চালাতে না পেরে এক সময় নিরুদ্দেশ হয়ে যান বিশ্বনাথ। এরপর শুরু হয় শেফালীর ব্যতিক্রমী সংগ্রামী জীবন। শেফালীর মেজ মেয়ে বিএ তৃতীয় বর্ষে ছাড়াও অন্য ছেলে-মেয়েরাও পড়ালেখা করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নারী নরসুন্দর শেফালীর পুরুষের চুল-দাড়ি কাটার কাজ প্রথমে অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। সে সময় খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো তাকে। আস্তে আস্তে সেই বাধা দূর হয় শেফালীর। দেখা যায়, ছোট একটি টিনশেড ঘরের বারান্দায় শেফালীর সেলুন। বাড়ির মালিক সৌদিপ্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী বিনামূল্যে শেফালীকে সেলুন করার জন্য বারান্দাটি দিয়েছেন। সেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চুল ও দাড়ি কাটার কাজ করেন শেফালী। পারিশ্রমিক যে যা দিচ্ছেন তাই নিয়েই সন্তুষ্ট শেফালী। শেফালী রানী শীল জানান, ‘নিজের সেলুন আর বসতঘর থাকলে বাকি জীবন ভালোভাবে কাটাতে পারতাম।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877