স্বদেশ ডেস্ক: রাজধানীর শাহবাগ থানা। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষের বাইরে সাদা রঙের পাতাবাহার ঝলমল করছে নিয়ন আলোয়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য ফুলগাছের নিচে বসে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত সোয়া ১১টায় পুলিশের একটি পাজেরো জিপ এসে থামল থানা কম্পাউন্ডে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক পদস্থ কর্মকর্তা গাড়ি থেকে নেমে প্রবেশ করলেন ওসির কক্ষে।
গত সোমবার বিকালে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পুলিশের বহুল আলোচিত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে। হাহকোর্ট তার জামিন বাতিল করে পুলিশের হাতেই তাকে তুলে দেওয়ার আদেশ দেন। এর পর মিজানুর রহমানকে নিয়ে আসা হয় শাহবাগ থানায়। সেখানে ওসির কক্ষে বসে তিনি বিশ্রাম করছিলেন। সেই কক্ষেই প্রবেশ করেছেন পাজেরো থেকে নামা ওই পদস্থ কর্মকর্তা। বেরিয়ে এলেন প্রায় ২০ মিনিট পর।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এই প্রতিবেদককে বললেন, ‘সৌজন্যতার কারণে এসেছিলাম। এই টুকটাক কথা হল (মিজানুর রহমানের সঙ্গে) আর কী।’ সোমবার রাতে ডিআইজি মিজানকে শাহবাগ থানার ওসির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে রাখা হয়। রাতভর সেখানে বেশ আরাম-আয়েশেই ছিলেন তিনি। তার দেখভাল করার জন্য দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েক জন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
তাদের একজন জানান, ডিআইজি মিজানকে সান্ত্বনা দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। ডিআইজি মিজান কক্ষে অবস্থানকালে পুরোটা সময় ওসির কক্ষের দরজা ভেতর থেকে লক করে রাখা হয়। কেউ ঢুকতে চাইলে অনুমতি নিয়ে ভেতরে যেতে দেখা গেছে। রাত ৮টার দিকে ওসির দেহরক্ষী কনস্টেবল কামরুল বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসেন। খাবার সেরে কিছুটা বিশ্রাম নেওয়ার পর রাত সোয়া নয়টার দিকে ডিআইজি মিজানের জন্য ওষুধ ও শপিং ব্যাগে কিছু পোশাক নিয়ে আসা হয়। এর পর পোশাক পাল্টে বিশ্রাম করেন তিনি। এ সময় কক্ষে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গল্প করছিলেন তিনি।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ কাস্টডিতে এলে প্রভাবশালীরাও কোমলমনা হয়ে যান। ডিআইজি মিজানের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।’ ওসির ব্যক্তিগত বিশ্রাম কক্ষটি ডিআইজি মিজানের ঘুমের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার ওসি বেরিয়ে যাওয়ার পর রাত পৌনে ১২টার দিকে কক্ষের লাইট নিভে যায়।
বাইরে দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য আস্তে আস্তে বললেন, ‘সকাল সকাল স্যারকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে। তাই মনে হয় ঘুমিয়ে পড়লেন।’ এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান আমাদের সময়কে বলেন, ‘প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ীই সবকিছু করা হয়েছে।’