স্বদেশ ডেস্ক: বন্যা ও নদীভাঙন কবলিত উপজেলা হিসেবে পরিচিত জামালপুরের ইসলামপুর। এ উপজেলাবাসীর চিকিৎসাসেবার প্রথম ভরসা ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু চিকিৎসক সংকটে ভেঙে পড়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের চার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গড়ে ওঠা ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় প্রতিদিন রোগীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল র্র্কতৃপক্ষের। হাসপাতালটিতে এখন চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন মাত্র তিনজন ডাক্তার।
দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি ও বহির্বিভাগে রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। ভিড় রয়েছে আন্তঃবিভাগেও। বর্হিবিভাগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। রোগীর চাপ সামাল দিতে হাসপাতাল র্র্কতৃপক্ষ উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের দিয়ে জরুরি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। কিন্তু এমবিবিএস ডাক্তার না পেয়ে হতাশ হয়ে অনেক রোগীকে যেতে হচ্ছে বাইরের কোনো ক্লিনিক কিংবা ৩৫ কিলোমিটার দূরের আড়াইশ শয্যার জামালপুর সদর হাসপাতালে।
হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা ৬০ বছরের বৃদ্ধ সামাদ আলী জানান, ‘আড়াই ঘণ্টা খাড়াইয়া থ্যাইক্যা চিকিৎসা করাবার পাইলাম না। অফিস বেবাকটি খুলাই কিন্তু ডাক্তরই নাইখ্যা। খাড়াইয়া থাইক্যা আরও অস্থির হইয়া গেছিগা। এহন বাড়িত যাইতাছি টেহা জুগাড় করবার। টেহা নিয়া পরে জামালপুর হাসপাতালে যামু।’
ডিগ্রির চর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা রবিজল জানান, ‘ছেলেডার খুব অসুখ। কিন্তু এইহানে আইয়া ডাক্তার দেহাবার পাইলাম না। এহন জামালপুর যাইয়া ডাক্তার দেহাবার টেহা নাই।’
৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ৩৩ জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে পদায়ন রয়েছে ১১ জনের। তারমধ্যে ৬ জন রয়েছেন বিভিন্ন বিভাগে ডেপুটেশনে। অবশিষ্ট ৫ চিকিৎসকের মধ্যে একজন রয়েছে ছুটিতে। আর প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিজে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেন না। ফলে যমুনা ও ব্রহ্মপত্রের চরাঞ্চলের ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার নিয়ে গঠিত ইসলামপুর উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হচ্ছে মোটে তিন ডাক্তারকে।
চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ কে এম শহীদুর রহমান জানান, ৩ জন ডাক্তার দিয়ে ৪ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। তারপরও সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎক সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন র্র্কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।