স্বদেশ ডেস্ক : ষোড়শ শতাব্দীর প্রাচীন কাহিনীর সেই বিশ্বনন্দিত সতী সাবিত্রী নায়িকা বেহুলা সুন্দরীর জন্মস্থান সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তৎকালীন নিচানীনগর বর্তমানে বিনসাড়া গ্রামে। বাছোবানিয়ার একমাত্র রূপসী কন্যা ছিলেন বেহুলা সুন্দরী। এককালে বৃহত্তর চলনবিল জনপদের বিভিন্ন এলাকায় রাজা ও জমিদারদের বসত ছিল। এখনও তাড়াশে অতীতের বহু পুরাকীর্তির নিদর্শন রয়েছে। যা কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ভূমি দস্যুদের কবলে পড়ে। এছাড়া বেহুলা সুন্দরীর বাড়ি এবং জীয়নকূপ এখনো তাড়াশে ইতিহাসের স্মৃতি বহন করে রয়েছে বিনসাড়া গ্রামে। এই গ্রামে আছে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন। অসংখ্য পুরনো মন্দির দালানকোঠা এখনও বিদ্যমান রয়েছে জনপদটিতে। কথিত আছে অনিন্দ্য রূপগুণের অধিকারিণী বেহুলা সুন্দরী বাবা বাছোবানিয়ার সঙ্গে প্রায়ই বাজার করতে আসতেন। বেহুলা যে বাজারে যেত তার নাম চান্দেরবাজার। প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর চান্দেরবাজার লাগোয়া তাড়াশের বস্তুল গ্রাম। যে বট গাছের নিচে বসে বেহুলা-লক্ষীন্দর গল্প করত সেই বট গাছটি এখনো বিশাল জায়গাজুড়ে কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
জানা যায়, বিনসাড়া গ্রাম (তৎকালীন নিচানীবাজার) এক সময় জমিদারদের বড় শহর ছিল। এখানে ছিল বড় বড় অট্টালিকা। যার স্মৃতি এখনো মাটি খুঁড়লে পাওয়া যায়। সতী বেহুলার বাড়িতে আছে বেহুলার কূপ। ওই কূপের মধ্যে আছে আরো চারটি ছোট ছোট কূপ।এ কূপ নিয়ে রয়েছে নানা রকমের জনশ্রুতি। শোনা যায় সব আশ্চর্য ঘটনা। যেমন এক কালে এ কূপের পানি অসুখ-বিসুখে পান করলে তার সুস্থতা ফিরে পেত। আরো জনশ্রুতির ব্যাপার হলো, ওই এলাকায় যদি কারো বাড়িতে বিয়ে বা কোন অনুষ্ঠান হতো তার পূর্বে কূপের সামনে গিয়ে বলে আসলে অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহƒত থালা, গ্লাস, বাটি, ডেকচিসহ সবকিছু উপরে উঠে থাকত। ঘটনাক্রমে কোনো একদিন কোনো কুচক্রী লোক প্রয়োজন শেষে ওই বাসনপত্র ফেরত না দেওয়ায় সেই থেকে কূপ তার আচরণ বদলে ফেলে।