বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

রেললাইনে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি!

রেললাইনে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি!

স্বদেশ ডেস্ক:

লক্কড় ঝক্কড় লোকোসেডের লাইন। লাইনের বেশির ভাগ অংশই নিচু। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। এর ফলে কাঠের স্লিপারগুলো পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তাই মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যূত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহের কেওয়াটখালি লোকোসেড থেকে শুরু করে রেলওয়ে স্টেশনের মেইন লাইনের সংযোগ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার লাইনের কাজ করা হচ্ছে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি দিয়ে। এ নিয়ে সকলের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনে বিছানো সুড়কিগুলো নিম্নমানের। জমিয়ে রাখা হয়েছে আরও অনেক সুড়কি। দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবে দুই নম্বর। ইতোমধ্যে এই বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় সব মহলে। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বইছে নিন্দার ঝড়।

অনেকেই এর জন্য ময়মনসিংহ রেলওয়ের গাফিলতি আর দুর্নীতিকেই দায়ী করছেন। বলা হচ্ছে, পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি দিয়ে টাকা লোপাট করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ইটের সুড়কি দিয়ে রেললাইন মেরামতের বিষয়টি দুঃখজনক। এটা কোনো যৌক্তিক কাজ হতে পারে না। কারণ এর আগেও কয়েকবার এই লাইনটিতে ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। মাঝখানে কয়েক বছর আগে একবার রেললাইনটি মেরামত করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে লাইনটিতে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে করে পরবর্তী সময়ে আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘রেললাইনে ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কেউ কখনো এমন অবস্থা কোনদিন দেখেছে বলে আমার মনে হয় না।’

এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘সরকারিভাবে পাথর কেনার কোনো বরাদ্দ নেই। টেন্ডার করে পাথর কিনে নিয়ে আসতে অনেক সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ওই জায়গাটি অনেক নিচু। দুই কিলোমিটার রেললাইনের সম্পূর্ণ অংশে কাঠের স্লিপার লাগানো। পানি জমে সেগুলো যেন পচে নষ্ট না হয় সেজন্য আপদকালীন সময়ে এই ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি জানান, ‘বরাদ্দ না থাকলে আমি কী করব? তাই পাথরের পরিবর্তে অল্প টাকায় ইট দিয়ে মেরামত করার চেষ্টা করেছি। সবাই ভাবছে আমি পাথরের পরিবর্তে ইট দিয়ে কাজ করে হয়তো টাকা আত্মসাৎ করেছি। তবে তারা জানে না এই কাজে আমার কোনো গাফিলতি নেই।’

এটি রেললাইনের মেইন লাইন না জানিয়ে মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘তবুও পাথর দিয়ে কাজ করার দরকার ছিল।’ এ সময় ইট, বালি দিয়ে এই কাজটি করার ফলে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেন তিনি। তবে যখন বরাদ্দ আসবে তখন পাথর দিয়েই এই রেললাইনের কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।

দুই নম্বর সুড়কি বিছিয়ে রেললাইনের কাজ করা হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। আর কখনো যেন নিম্নমানের ইট, সুড়কি ও বালি ব্যবহার করা না হয় সে সম্পর্কে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। কাজ শেষে আমার কাছ থেকেই বিল নিতে হবে। এরপরও যদি দুই নম্বর কিছু ব্যবহার করা হয় বিল কম দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877