স্বদেশ ডেস্ক:
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কাজী পাড়া গ্রামে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন এক স্বামী পরিত্যাক্তা নারীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা করার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গ্রামের প্রভাবশালীরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও অবশেষে একটি মানবাধিকার সংগঠনের সহায়তায় থানায় মামলা করেছেন ওই নারীর মা।
জানা গেছে, দাম্পত্য জীবনে বনিবনা না হওয়ায় গত দেড় বছর আগে স্বামী পরিত্যাক্তা হয় কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ৩১ বছর বয়সী ওই নারী। এরপর থেকেই সরকারের দেওয়া টিনশেডের একটি পাকা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
তবে মা মেয়েকে বাসায় রেখে ঝিয়ের কাজ করতে যেতেন বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে। আর এ সুযোগে একই গ্রামের দুখু মিয়া ও রয়েল নামে দুই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে তার বাড়িতে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করতো ওই নারীকে।
সম্প্রতি মেয়েটির শারীরিক গঠনে পরিবর্তন দেখা দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়। আর এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত ২০/২৫ দিন পূর্বে জয়পুরহাট শহরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির বাচ্চা নষ্ট করে ধর্ষকরা। এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়েটির মা মামলা করতে চাইলে গ্রামের প্রভাবশালীরা তাতে বাধা দেয়।
ঘটনাটি বেশ কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন জায়গায় চাউর হলে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জয়পুরহাট জেলা শাখা নামে একটি সংগঠন গতকাল সোমবার বিকেলে কাজী পাড়া গ্রামে গিয়ে মা ও মেয়েকে বন্দীদশা থেকে উদ্ধার করে ক্ষেতলাল থানায় নিয়ে আসেন। পরে দুজনকে আসামি করে মেয়েটির মা একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানান, ‘একটি খবরের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরে কাজী পাড়া গ্রামে অনেকটাই বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে থানায় নিয়ে আসি। পরবর্তী সময়ে তার মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।’
সংগঠনের সভাপতি নূর ই আলম বলেন, ‘জয়পুরহাটে দিন দিন বেড়েই চলেছে নারী ও শিশু ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানীর মতো ঘটনা। এতে আমরা অনেকটাই উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। আমরা চাই, এসব ঘটনা খুব দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের সর্বোচ্চ বিচার হোক।’
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নীরেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, ‘সোমবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বাদী হয়ে কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত. আকামত আলীর ছেলে দুখু মিয়া (৫৫) ও একই গ্রামের আলম দেওয়ানের ছেলে রয়েল হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে একটি এজাহার করেছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আদলত সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় ৮ নারী-শিশু ধর্ষণ ও ৩৩ নারী-শিশু শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছেন।