স্পোর্টস ডেস্ক: ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন বিশ্বকাপের ছয় মাস আগেই ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছিলেন। সেই ইংল্যান্ডের এখন সেমিফাইনালে ওঠা নিয়েই টানাটানি
বেশি দিন না, মাত্র ছয় মাস আগের কথা। এ বছরের জানুয়ারিতে ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাসের হুসেইন বলে দিয়েছিলেন, এবারের বিশ্বকাপ জিতবে ইংল্যান্ড। গত দুই বছরে ইংল্যান্ডের যা ফর্ম, নাসেরের সঙ্গে দ্বিমত করার মানুষ তখন খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ সেই ইংল্যান্ডের এখন সেমিফাইনালে ওঠা নিয়েই টানাটানি!
অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬৪ রানে হেরে নিজেদের সেমিফাইনালের আশাটা আরও একটু মলিন বানিয়ে ফেলেছে এউইন মরগানের দল। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচ এখন আক্ষরিক অর্থেই তাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, দুই ম্যাচের একটিতে হারলেও বেজে যেতে পারে বিদায়ঘণ্টা। অথচ নিজেদের কাজটা নিজেরাই কঠিন বানিয়েছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে দুটি ম্যাচ হেরেই বিপাকে পড়ে গেছে তারা। ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ হার নিয়ে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের চারে থাকলেও বিপদের শঙ্কা আছে বেশ ভালো রকম।
বাদ পড়ার শঙ্কা বোধ হয় ভর করেছে নাসের হুসেইনের মনেও। না হলে ছয় মাসে আগেই যিনি ইংল্যান্ডকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখছিলেন, তিনিই কেন এখন বলবেন, এবারের বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের ইতিহাসেরই সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ হয়ে যেতে পারে!
এখন পর্যন্ত তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও একবারও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি ইংলিশদের। এবার মরগানদের ঘিরে ইংলিশদের প্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে এটিই হবে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ, এমনটাই মনে করছেন ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেওয়া নাসের হুসেইন, ‘আমাদের বেশ কয়েকটি বাজে বিশ্বকাপ গেছে। আমি নিজেও কয়েকটি দুর্বিষহ বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছি। ইংল্যান্ড যদি এখন থেকেই সতর্ক না হয়, তাহলে এটিই হতে পারে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ।’
নাসের হুসেইনও তাই বলছেন, এ বিশ্বকাপে প্রত্যাশামাফিক ফল করতে না পারলে সেটি ইংলিশ ক্রিকেটের জন্যই দুর্যোগ বয়ে আনতে পারে। সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিলে ইংলিশ ক্রিকেটে কী রকম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে, বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভকে সেটি ব্যাখ্যা করেই বলেছেন সাবেক অধিনায়ক নাসের, ‘আপনাকে বিভিন্ন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে জানতে হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মানিয়ে নেওয়া শিখতে না পারলে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য বড় বিপর্যয়ই অপেক্ষা করছে।’
তাৎক্ষণিক বিপর্যয় নয়, নাসের হুসেইন বরং বেশি চিন্তিত দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয় নিয়েই। বিশ্বকাপের পরপরই ঘরের মাটিতে অ্যাশেজ। বিশ্বকাপের ফল বিপর্যয় যে অ্যাশেজেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেটিই মনে করিয়ে দিয়েছেন নাসের। ১৯৭৫ এর পর এই প্রথম একই বছরে বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজ আয়োজন করছে ইংল্যান্ড।