স্বদেশ ডেস্ক: ‘মানিকগঞ্জের পশ্চিমকোণে একটি গ্রাম আছে যেটি প্রতিবছর বানের জলে ভাসে। বাঁচা-মরা, ভাঙা-গড়া নিত্যদিনের খেলা। সকাল বেলার বাদশা-যেজন সন্ধ্যা বেলায় ফকির। এক সময় এই গাঁয়ের লোক ছিলো অনেক সুখি। সেসময় তাদের ছিল গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ। এখন তারা অনেক দুঃখি, নাই ঘর-বাড়ি। সারাদিন চড়ে নাকো কারো চুলায় হাড়ি। এপার ভাঙে ওপার গড়ে নিত্য দিনের খেলা। তাইতো সবাই গাঁয়ের নাম রাখলেন বাঁচা-মরা।’ যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা গ্রাম। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এবারও নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী ভাঙনের এমন করুন চিত্র নিয়ে কবিতাটি লিখেছেন বাঁচামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো আব্দুল লতিফ। এবার চেয়ারম্যানের বাড়িটিও ভাঙনের কবলে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যমুনার ভাঙনের কবলে পড়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে বাঁচামারা গ্রামটি। গত দুই মাসের ভাঙনে প্রায় চার শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি হারানো বেশিরভাগ ক্ষতিগ্রস্তরাই পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। রোদ-বৃষ্টিতে তাদের দিন কাঁছে চরম মানবেতর। সামর্থবানরা অন্যত্র আশ্রয় নিলেও, দরিদ্ররা কোথায় যাবেন সেই চিন্তায় দিশেহারা। নদীভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে বাঁচামারা বাজার, একটি প্রাইমারি ও হাইস্কুল, মসজিদসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই ভাঙনরোধে ব্যবস্থা দ্রুত নেয়ার দাবি স্থানীয়দের। বাঁচামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ জানান, গত কয়েক দিনে নদী ভাঙনে প্রায় চারশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘর-বাড়ি হারানো মানুষকে জায়গা দিতে পারছেন না। সরকারের কাছে অনেক লেখালেখি করেছেন। কিন্তু দুর্দাশাগ্রস্ত মানুষের পাশে কোনো ত্রাণ বা সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে পারেননি তিনি।