স্পোর্টস ডেস্ক :
সকাল থেকেই কাল আলোচনা মোসাদ্দেক ও সাইফউদ্দিনকে নিয়ে। মোসাদ্দেক সবুজ সংকেত পেয়েছেন। সাইফউদ্দিনও খেলবেন। এক্ষেত্রে রুবেল আজকের ম্যাচে থাকবেন না। বিশ্বকাপে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯ উইকেট শিকারি সাইফ। উইকেট শিকারে তো অবশ্যই ‘সবেধন নীলমণি’। বাংলাদেশের কাছে বিশ্বকাপ তো এখন ‘এশিয়া কাপ’। শেষ তিন প্রতিপক্ষই যে আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান! চেনা প্রতিপক্ষ সবাই, শুধু মঞ্চটা ভিন্ন।
এশিয়ার সব দলই স্পিন ভালো খেলে। তবে সেটি বড় কথা নয়। ভারত একদিন আগেই মুজিব-রশিদ-নবীতে কাঠপুতুলের মতো নেচেছে। ভারতের অমন ব্যাটিং সিংহদের বিপক্ষে এমন বোলিংয়ে সবারই ভয়ে সিটকে যাওয়ার কথা। বাংলাদেশ অবশ্য, মিটিমিটি হাসতে পারে! রশিদ-নবী তো ঘরের ছেলে। সারাবছর বাংলাদেশের লিগে তারা খেলে। তবে বিশ্বকাপে সুতোয় ঝুলে থাকা সেমিফাইনাল স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে আফগানিস্তানের স্পিনকে পায়ে মাড়িয়ে যেতে হবে! এই মাঠে ভারতকে ২২৪ রানে বেঁধে রাখেন আফগানরা। অবশ্য নিজেরা ২১৩ রানে থেমেছে।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ভালো করেই জানে, আফগানিস্তানের লড়াইটা পেনাল্টির মতো। গোল হলে সবাই বলবে এটি তো হওয়ারই ছিল। মিস যদি হয় তা হলে সমালোচনার শেষ থাকবে না। আফগানিস্তানের সঙ্গে জিতলে বিশ্বকাপ আশা বেঁচে থাকবে। আর সবাই বলবে, আফগানিস্তানের ম্যাচটি তো জেতার কথাই ছিল!
বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডস গতকাল বলেছেন, আফগানিস্তানের মানসম্পন্ন স্পিনার রয়েছে। তিনি বা বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা এটা ভয় পাচ্ছেন না। অবশ্যই সমীহ করতে হবে।
রোডস মনে করেন, আফগানিস্তানের স্পিনাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করছে। আর রোডস স্বপ্নবাজ মানুষ। কাল তিনি এটিও বলেছেনÑ আমি তো মনে করি এমনও হতে পারে, আমরা গ্রুপের তিনটি জিতে সেমিতে যেতে পারি। আর পরের দুটি জিতে বিশ্বকাপ জয় (্হাসি)!’ এমন হলে সেটি মিরাকলই হবে। বাংলাদেশ মিরাকলটাই এখন চায়। সাকিব ও মিরাজ স্পিনার হিসেবে রয়েছেন দলে। যদিও কাল বল মাথায় লেগে কিছুটা আঘাত পান মিরাজ। অবশ্য সেটি বড় কিছু ছিল না। আইসিসির কাছে ইন্টারভিউ দিচ্ছিলেন। এ সময় বল এসে মাথায় লাগে। নেটে ব্যাট করছিলেন সাব্বির। মাথায় পানি দিতে হয়েছে। পরে জানা যায় তেমন কিছু না। শঙ্কা রয়েছেই অবশ্য।
গতকাল অনুশীলনে ছিলেন মোসাদ্দেক ও সাইফউদ্দিন। দুজনের আজ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সকালে টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে। যত স্পিন উইকেটই হোক। সাইফ এই বিশ্বকাপে সোনার ডিম পাড়া হাঁস। তাকে দলে চাইবেন মাশরাফিও। তবে ভয়ের কথা। যে উইকেটে ভারত-আফগানিস্তান খেলেছে, সেটিতেই আজ আবার খেলা। বৃষ্টি আজ সকালে হতে পারে। স্পিন ট্র্যাক। সারাদিন রোদ থাকবে বিধায় টস গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ অনেক হিসাব করে মাঠে নামবে আজ। এই মাঠে বাংলাদেশ নতুন নয়। ২০০৪ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই মাঠে খেলেছে। বাংলাদেশ ম্যাচটিতে হেরেছিল। ১৩৮ রানে হার। আর সেই সময় বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন রাজিন সালেহ। ওই দলটির শুধু মুশফিকুর রহিম এখন বাংলাদেশ দলে রয়েছেন।
এ ছাড়া সবার কাছে এই মাঠ নতুন। মুশফিক কাল নিজের ঘরের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন এ মাঠে। একাই হ্যাম্পশায়ার বোল স্টেডিয়ামের পেছনে নেটে ব্যাটিং করতে চলে যান। মাশরাফি এখানে আগে আসেননি। তবে আশা করছেন ভালো একটা লড়াই হবে। সুতোয় ঝুলে আছে বাংলাদেশের ভাগ্য। আজ হারলে, সব শেষ! দেয়ালে পিঠ ঠেকা বাংলাদেশ খুব ভয়ঙ্কর। পাহাড়ি ও সাগরের পাশে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে আবার লাল-সবুজের জয়ের অপেক্ষা এখন। অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই।