শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

বিএনপির কাউন্সিল অক্টোবরে!

বিএনপির কাউন্সিল অক্টোবরে!

স্বদেশ ডেস্ক : তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্ব আনতে অক্টোবরে জাতীয় কাউন্সিল করার চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি। এবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম-জাতীয় স্থায়ী কমিটি থেকে সর্বস্তরের কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা গুরুত্ব পাবেন বলে জানা গেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যখন এমন পরিকল্পনা করছে, তখন আকস্মিকভাবে খালেদা জিয়ার দ্রুত মুক্তির গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। দলের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

গত শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা আসে হঠাৎই। সেখানে শীত মৌসুমে কাউন্সিল করার বিষয়টি সামনে আসে। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলেছেন কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির পরই কাউন্সিল করার পক্ষে অধিকাংশ নেতাকর্মীর। কারণ তার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্বে নির্বাচন নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে খালেদা জিয়া শিগগিরই মুক্তি পাবেন এমন ধারণা থেকে কাউন্সিলের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে-এমন কথাও বলছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমানও আমাদের সময়কে বলেন, আমরা আশা করছি-সরকার বাধা না হলে দ্রুতই কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাকি দুই মামলায় (জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল মামলা) জামিন পাবেন, মুক্ত হবেন। দলের এক ভাইস চেয়ারম্যান জানান, কাউন্সিলের জন্য যাবতীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হবে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পেলেই দ্রুত কাউন্সিল করা হবে।

জানা গেছে, আগামী শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কাউন্সিলের জন্য উপকমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা হবে। দলের গঠনতন্ত্রে কো-চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত মহাসচিবসহ নতুন পদ সৃষ্টি এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদ বিলুপ্ত করাসহ কিছু সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হবে। ষষ্ঠ কাউন্সিলের আগেও এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, এবারের কাউন্সিল জাঁকজমকপূর্ণ নাও হতে পারে। ঘরোয়া পরিবেশেই কাউন্সিল অনুষ্ঠান করার চিন্তাভাবনা চলছে।

রবিবার বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সপ্তম জাতীয় কাউন্সিলের কথা ভাবছি। সবার আগে আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রত্যাশা করছি। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে আশা করছি, শিগগিরই বেগম জিয়া মুক্তি পাবেন। তাকে নিয়েই আমরা কাউন্সিল করতে চাই। নতুন নেতৃত্বে বিএনপিকে চাঙ্গা করাই আমাদের উদ্দেশ্য।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ ব্যারিস্টার নওশাদ জমির আমাদের সময়কে বলেন, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আনতে দলের মধ্যে কাউন্সিলের চিন্তা আছে। সপ্তম কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নাম এরই মধ্যে মহাসচিব হিসেবে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

তবে আদৌ মহাসচিব পরিবর্তন হবে কিনা সে বিষয়টি এখনো দল থেকে স্পষ্ট করা হয়নি। এদিকে কাউন্সিলের আগে বিএনপি সারাদেশের বিভাগীয় পর্যায়ে বেগম জিয়ার মুক্তি দাবিতে সভা সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা বিভাগীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক সফরও করতে পারেন। বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকেও সম্পৃক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। এ নিয়ে আজ সোমবার ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর দলকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল ও অঙ্গ সংগঠনের সর্বস্তরের কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি ইতিবাচক উদ্যোগ। আমাদের চাওয়া আগামী দিনের কাউন্সিলে নির্বাচনের মাধ্যমে ত্যাগী ও যোগ্যদের যেন নেতৃত্বে নিয়ে আসা হয়।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877