সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

টাইটানিক : এখনো কান্না শোনা যায়

টাইটানিক : এখনো কান্না শোনা যায়

স্বদেশ ডেস্ক : লোকমুখে শোনা যায়, সাউদাম্পটন বন্দরের দেয়ালে কান পাতলে এখনো কান্নার আওয়াজ শোনা যায়! ১৯১২ সালে এ বন্দর থেকে ছেড়ে গিয়েছিল টাইটানিক। যাত্রা শুরু হলেও শেষ হয়নি। নর্থ আটলান্টিকে ১৫০০ মানুষের সলিলসমাধি হয়েছিল। নিখোঁজ ও ওপারে পাড়ি জমানোদের আত্মীয়স্বজন সেদিন এ বন্দরে এসেছিলেন।

আজ থেকে ১০৭ বছর আগে টাইটানিকের রওনা দেওয়ার দিনটি ছিল উৎসবের; কিন্তু ডুবে যাওয়ার দিন এই বন্দরটিতে হয়েছে শোকের মাতম। শুধু নারী ও শিশুকে অগ্রাধিকার দিয়ে লাইফবোটে তোলা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে জেমস ক্যামেরনের চলচ্চিত্রে দেখা গিয়েছিল, জ্যাক সাগরের অতল গভীরে তলিয়ে যান রোজের কাছে ভালোবাসা জমা রেখে। নিজের জীবন দিয়ে রোজকে বাঁচিয়ে অমর হয়ে যান তিনি!

বাংলাদেশের খেলার সুবাদে সাউদাম্পটনে আসা। টাইটানিককে ঘিরে একটি জাদুঘর করা হয়েছে। সেটির নাম সি সিটি মিউজিয়াম। সময়ের অভাবে সেখানে যাওয়া হয়নি। তবে টাইটানিক যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল যাত্রী নিয়ে, সেখানে গিয়েছি। আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম একটি বিশাল জাহাজ দাঁড়ানো। বিশাল এ জাহাজের নাম ওয়াসিস অব দ্য সি। যেটি কিনা টাইটানিকের চেয়ে ৫ গুণ বড়। তবে আমার সামনে দাঁড়ানো ছিল ‘পি অ্যান্ড ও’ ক্রুসেস। বন্দর বন্ধ বলে ভেতরে যাওয়া গেল না। ওই দাঁড়ানো জাহাজের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললাম। একটু পরে এই জাহাজটি ছেড়ে গেল। স্থানীয় এক বন্দরকর্মীকে টাইটানিক নিয়ে প্রশ্ন করলাম।

তিনি বলেন, ‘আমি জানি জাহাজটি বেলফাস্টে তৈরি হয়েছিল। আর ক্যাপ্টেন ছিলেন স্মিথ। ১০৭ বছর আগের ঘটনা কারও মনে নেই অবশ্য। তবে ১০ এপ্রিল অনেকে আসেন। অনেকে ফুল রেখে যান।’

আমি ভাবছিলাম টাইটানিক নিয়ে। ইংল্যান্ডের ধারণা ছিল এটা গর্বের যে, এমন একটা জাহাজ তারা তৈরি করেছে। বেলফাস্টে যখন তৈরি হয়, তখন সবাই বলেছে-এই জাহাজ কোনো দিন ডুববে না। প্রকৃতি এটা মেনে নেয়নি হয়তো। ১৪ এপ্রিল একটি বরফখণ্ডে আঘাত লেগে জাহাজটি ডুবে যায়। সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট নিচে ঘুমিয়ে পড়ে টাইটানিক। ১৯৮৫ সালে আমেরিকার মিলিটারি কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে জাদুঘরে দিয়ে দেয়। টাইটানিকে সেদিন যেমনটি ঘটেছিল। সেটি এক স্থানীয়র মুখে শুনলাম। বেশিরভাগ বিশ্বাস করিনি।

উডওয়ার্ড নামের ওই বৃদ্ধের গল্পটি এমন-‘জাহাজ তখন মাঝ সাগরে। ছোট-বড় বরফখণ্ড আসছিল। টাইটানিকের ছিল ২টি ইঞ্জিন। আর খুব শক্তিশালী। বরফখ- গুঁড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। এরপর বিশাল বরফখণ্ড এড়াতে গিয়ে ধাক্কা খায় টাইটানিক। আমার কি মনে হয় জানেন? ক্যাপ্টেন হয়তো কিছু হবে না ভেবে সরাসরি আঘাত হেনেছেন। তিনি ভেবেছেন টাইটানিক বরফখণ্ডটি ভেঙে বেরিয়ে যেতে পারবে!’

আমি শুধু তার কথা শুনলাম, কিছু না বলে চলে এলাম। বন্দর দিয়ে হাঁটতে গিয়ে কানে আসছিল, সেদিনের উৎসবের কথা। কিছুটা সিনেমার দৃশ্য ভেসে আসছিল মনের গভীর কোণে। জ্যাক জাহাজে উঠছে। এটাই ছিল অন্তিমযাত্রা! আর ফিরে আসেনি সে। আরও অনেকে ফিরে আসেনি। তাদের নাম অনেকে জানেন। অনেকে বেঁচে নেই। টাইটানিকের নাম হয়তো থাকবে অনেক দিন ধরেই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877