স্বদেশ ডেস্ক:
দেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ১০ জুন থেকে শুরু হবে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। এবারের অধিবেশনে থাকছে না কোনো আড়ম্বর। অনেক বিধি-নিষেধ মেনে অধিবেশন শুরু হবে। প্রতি বছরই বাজেট অধিবেশনকে ঘিরে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করে সংসদ সচিবালয় বা সংসদ এলাকায়। কিন্তু এবার সেই উৎসবের আমেজ থাকছে না। যেহেতু সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। তাই সবকিছুই সীমিত আকারে হতে যাচ্ছে।
১০ জুন বিকাল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশন কতদিন চলবে, কীভাবে চলবে সব চূড়ান্ত হবে অধিবেশন শুরুর আগে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে। স্পিকারের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত যতদূর জানি মোট ৭ কার্যদিবস বাজেট অধিবেশন চলবে। বাজেট পাস হবে ৩০ জুন।
সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার পর সদ্য পরলোকগত সংসদ সদস্যের ওপর আনীত শোক প্রস্তাবের আলোচনা শেষ করেই দিনের কার্যসূচি মুলতবি হতে পারে। এরপর ১১ জুন সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নতুন অর্থবছরের অর্থাৎ ২০২০-২০২১ এর বাজেট অনুমোদন দেয়া হবে।
অন্যান্য বাজেট অধিবেশনের মতো এবারও মন্ত্রিসভায় বাজেট অনুমোদন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ খসড়া বাজেটের অনুমোদন দেবেন। এরপর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন।
এবারের বাজেট অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীসহ ১০ মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তি এরই মধ্যে জারি হয়েছে। এছাড়া একজন প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। অন্যান্য বাজেট অধিবেশনে মন্ত্রিসভার পূর্ণ সদস্যরাই উপস্থিত থাকতেন।
এবার সংসদ সচিবালয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসতে হচ্ছে না। মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকের জন্য নির্ধারিত মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ ১০ জন সচিব/সিনিয়র সচিব উপস্থিত থাকবেন। প্রতি অর্থবছরে বাজেট উপস্থাপনের দিন বিশিষ্ট ব্যক্তি, কূটনৈতিক প্রতিনিধি, গণমাধ্যমের সম্পাদকরা আমন্ত্রণ পেয়ে থাকেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার অতিথি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। বাজেট বইয়ের সেটও ছোট হচ্ছে। শুধু অত্যাবশকীয় ৬টি বই এবারের বাজেট ব্যাগে থাকবে। তবে কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা ভেঙে এবার পাটের ব্যাগ আর থাকছে না।
করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজেট অধিবেশনে সবকিছুই সীমিত আকারে হবে। শুধু কোরাম পূর্ণ করার তাগিদে নির্দিষ্ট কিছু সংসদ সদস্যকে উপস্থিত থাকতে বলা হচ্ছে। সংসদ সদস্যদের সঙ্গে থাকা স্টাফদের প্রবেশে অনুমতি থাকছে না। সংসদ সদস্যদের বসার স্থান নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে হবে। সংসদের ভেতরে প্রবেশ গেটেই থাকবে থার্মাল স্ক্যানার। প্রত্যেকের তাপমাত্রা মেপে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি মিলবে।
এবার আর বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনা হবে না। নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে ৩০ জুন বাজেট পাস হবে। এবার টানা বাজেট অধিবেশন চলবে না। প্রথম দুই দিন অর্থাৎ ১০, ১১ জুন চলার পর ১২ ও ১৩ জুন সাপ্তাহিক ছুটি। এরপর ১৪ ও ১৫ জুন চলবে। এরপর আবার বিরতি। এভাবে বিরতি দিয়ে মোট ৭ কার্যদিবস চলতে পারে অধিবেশন।