স্বদেশ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘মানবপাচার ২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এতে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নারী এবং শিশুরা মানবপাচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি এবং বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে রয়েছে।
পাচারকারী চক্র তাদের গৃহকর্মী হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাসে লেবানন, জর্ডান, সিরিয়াসহ কয়েকটি দেশে পাচার করে দেয়। সেখানকার কর্মস্থলে তারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন অথবা তাদের যৌন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হয়।
চীনের কিছু নাগরিক বিয়েসহ মিথ্যা প্রলোভনে বাংলাদেশের নারীদের বিদেশে পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এভাবে প্রতিবছর অন্তত ৭ লাখ বাংলাদেশি নারী-পুরুষ অবৈধ পন্থায় এবং মানবপাচারকারী চক্রের সহযোগিতায় বিদেশে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে।
গত শুক্রবার ভয়েজ অব আমেরিকার এক খবরে জানানো হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবপাচার সংক্রান্ত প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও মেয়ে শিশুদেরও ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা নারী ও মেয়ে শিশুরা যৌন হয়রানি এবং মানবপাচারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপদাপন্ন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। পাচারকারীরা তাদের চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বাংলাদেশের মধ্যেই রেখে দেয় যৌন কর্মে নিয়োজিত করতে।
কখনো কখনো তাদেরকে কলকাতা ও কাঠমান্ডুতে যৌনকর্মী হিসেবে পাচার করে দেওয়া হয়। রোহিঙ্গাদের মধ্যেই কিছু ব্যক্তি এ জাতিগোষ্ঠীর নারী ও মেয়ে শিশুদের বিয়ে, ভালো চাকরিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে ক্যাম্পগুলো থেকে তাদের পাচারের চেষ্টা চালায়।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উৎকোচের বিনিময়ে এ পাচারকাজে নানাভাবে সহায়তা করে। প্রতিবেদনে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হলে তার বিচারে আদালত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শৈথিল্য ও গড়িমসির প্রসঙ্গ নানাভাবে উঠে এসেছে।
বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতা এবং অনাগ্রহ রয়েছে বলে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বলা হয়, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থাহীনতার কারণে তাদের কাছে জনগণ সহযোগিতা কামনাও করে না।
এ ছাড়া মানবপাচার প্রতিরোধ এবং বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিগত বছরগুলোয় কিছু কার্যক্রম নেওয়া হলেও যথাযথ মানদণ্ডের তা যথেষ্ট নয়। আর সরকারের এ সংক্রান্ত কার্যক্রম অতীতের চেয়ে ভালো এটাও প্রমাণ করতে পারেনি।
এ কারণেই চলতি বছরকে ধরে গত তিন বছরই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ পর্যবেক্ষণ বা নজরদারির তালিকায় রয়েছে।