স্বদেশ ডেস্ক: হামলা, ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চতুর্থ দিনের মতো নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। তবে ভাঙচুরকৃত যন্ত্রপাতি ঠিক করতে স্বল্প পরিসরে কাজ শুরু করেছেন চীনা শ্রমিকরা।
এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে অবস্থানরত সব বাঙালি শ্রমিকের জন্য আগামী ১৫ দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন দিনের মধ্যে শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধেরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আবদুল মাওলা জানান, সংঘর্ষে ভাঙচুর হওয়া সার্ভারসহ বিভিন্ন যন্ত্র ঠিক করে কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বাঙালি শ্রমিকদের এই ছুটি দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজওয়ান ইকবাল খান জানান, গতকাল শনিবার সকাল থেকে চীনের শ্রমিকরা স্বল্প পরিসরে প্ল্যান্টের ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতি ঠিক করা শুরু করেছেন। প্ল্যান্টের ভেতরে এবং বাইরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে চুরি, ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় করা মামলায় ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার ১২ বাঙালি শ্রমিককে গতকাল দুপুরে কলাপাড়া থানায় নিয়ে আসা হয়। দুপুরেই তাদের আদালতের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
কলাপাড়া থানার এসআই মোজাম্মেল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকরা হলেন-নারায়ণগঞ্জের ইমাম হাসান, সিরাজগঞ্জের মামুন গোলাম শেখ, টাঙ্গাইলের মেহেদী হাসান জিকু, শামীম মিয়া, রাসেল আলী মণ্ডল, আতিকুর রহমান, লতিফ মিয়া, সুজন মিয়া, সাগর শেখ, আইয়ুব আলী মণ্ডল, বেল্লাল হোসেন ও ফারুক হোসেন।
সাবিন্দ্র দাস নামে এক শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে গত ১৮ জুন পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাঙালি ও চীনা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ বাঙালি ও ছয়জন চীনা শ্রমিক আহত হন। পরে আহতদের বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্যাং ইয়াং সং নামে এক চীনা শ্রমিক মারা যান।
ওইদিনই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চীনের এনইপিসি কোম্পানির সেফটি ডিরেক্টর ওয়াং লি বিং কলাপাড়া থানায় অজ্ঞাত ১২শ’ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাফিজ জানান, গতকাল তিনি বাঙালি শ্রমিকদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। আজ সকাল থেকে চীনা শ্রমিকদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।