স্বদেশ ডেস্ক: আদালতে শুনানি চলাকালে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও সরকারি কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন তার ছেলে। গত বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় মুরসির ছেলে আবদুল্লাহ তার বাবার হত্যাকারী হিসেবে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন।
টুইট বার্তায় আবদুল্লাহ দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিসহ একাধিক কর্মকর্তাকে মুরসি হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ করেন। তার বাবার হত্যার পেছনে তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ তৌফিক, মগদি আবদেল গফারকে বিশেষ করে দায়ী করেন।
আবদুল্লাহ ওই টুইটে মিসরের বিচারপতি শিরিন ফাহমি, শাবান আল-শামী ও আহমেদ সাবরি, অ্যাটর্নি জেনারেল নাবিল সাদেক এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আব্বাস কামেলকেও মুরসির হত্যাকারী বলে অভিযোগ করেন।
তবে এখন পর্যন্ত আবদুল্লাহর এই অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করেনি মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১৭ জুন সোমবার মুরসিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তোলা হয়। এর ৫ মিনিটের মাথায় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এর পর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মিসর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
যদিও মুরসির মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে মিসর। বিশ্বের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মুরসিকে যেভাবে জেলে রাখা হয়েছিল তা নিয়ে সমালোচনা করছে। মুরসির মৃত্যুর ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্ত দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা এ ঘটনায় নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্ত চেয়েছে।
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, জালিমদের কারাগারে মুরসি শহীদ হয়েছেন।
আদালতে মৃত্যুর পরদিন স্থানীয় সময় ভোরবেলায় রাজধানী কায়রোয় সমাহিত হন দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মদ মুরসি। সমাহিত করার সময় তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে মুরসির ছেলে আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ মুরসি জানান, মিসর সরকার তাদের অনুরোধ রাখেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে মুরসির নিজ গ্রামে জনতার অংশগ্রহণে জানাজার অনুরোধ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত ‘আরব বসন্ত’ নামে গণতন্ত্রের যে জোয়ার এসেছিল সেই ধাক্কায় মিসরের তৎকালীন শাসক হোসনি মুবারকের পতন হয়েছিল। ২০১২ সালে মিসরে প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুরসি নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই ক্ষমতা বেশিদিন টেকেটি। এক বছরের মাথায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে মুরসি সরকারের পতন হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে মুরসির সংগঠন ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করে সেনা সরকার। ব্রাদারহুডের শত শত নেতাকর্মীকে বিভিন্ন দণ্ড দিয়েছে জেনারেল সিসি সরকার।