শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
দালালির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং সীমা-পরিসীমার ক্ষেত্রফল!

দালালির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং সীমা-পরিসীমার ক্ষেত্রফল!

সত্তরের দশকে বাংলাদেশে দালাল বলতে সাধারণত গরুর দালালকেই বুঝাত। সেই সময়কার জাতীয় অর্থনীতির শতকরা প্রায় নব্বই শতাংশ নির্ভর করত কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর। গ্রামবাংলার-কৃষি, গবাদিপশু পালন, পরিবহনব্যবস্থা ইত্যাদি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গরুর ভূমিকা ছিল বিশাল। আমাদের গ্রামে এমন কোনো বাড়ি ছিল না যেখানে দুই-চার-দশটি গরু পালিত হতো না। গরু বেচা-কেনার জন্য বিরাট বিরাট হাট বসত এবং সেসব হাটে দালালদের প্রভাব ছিল সর্বজন স্বীকৃত। সত্তরের দশকের বাংলায় গরুর দালালেরা কোনোক্রমেই ঘৃণিত ও নিন্দিত ছিল না। তাদের সামাজিক মর্যাদা এবং গ্রহণযোগ্যতাও ছিল ঈর্ষণীয়। লোক ঠকানো, টাউটারি-বাটপাড়ি ইত্যাদি মন্দ অভিধা সাধারণত গরুর দালালদের স্পর্শ করত না। কারণ তখনকার সমাজব্যবস্থার কারণে মন্দ চরিত্রের লোকজন দালালি পেশায় টিকতে পারত না।
গরুর দালালির পর ভূমির দালালদের আবির্ভাব ঘটে আশির দশকের শুরুতে। এই সময় বাংলার অর্থনীতিতে কৃষির পাশাপাশি শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, গৃহনির্মাণসহ অন্যান্য পূর্তকর্ম যোগ হয়। ফলে রাতারাতি ভূমির ব্যবহার বেড়ে যায় এবং ভূমিকেন্দ্রিক আর্থিক লেনদেনও ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। ফলে এই সেক্টরে দালালদের আগমন ঘটে। কিন্তু ভূমির দালালেরা গরুর দালালদের মতো সুনাম বজায় রাখতে পারেনি। কারণ ভূমির দৈর্ঘ্য-প্রস্থের ব্যাপ্তি এবং মূল্যমানের তারতম্যের সাথে পাল্লা দিয়ে ভূমি দালালদের দৌরাত্ম্য, দুর্বৃত্তপনা ও অসততা বাড়তে থাকে। সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতে কাজের পরিধি বেড়ে যায় এবং শুরু হয় নতুন নতুন দুর্নীতি এবং সেসব দুর্নীতি পরিচালনার জন্য নানাবিধ দালালি শুরু হয়ে যায়।
আমাদের দেশে আশির দশকে যে দালালিটি সবচেয়ে নিন্দনীয় বলে সর্বজন স্বীকৃত হয়, তার নাম মেয়েমানুষের দালালি। দুনিয়াব্যাপী মেয়েমানুষের দালালি একটি আদিম পেশা বলে বিবেচিত হলেও আমাদের দেশে আশির দশকের আগে এই শ্রেণীর দালালদের প্রকাশ্যে দেখা যেত না। এরশাদ জমানার সামরিক শাসনে বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী হয়ে পড়ে, অন্য দিকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের বিরাট অংশ হয়ে পড়ে অথর্ব-অকর্মণ্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে অপদার্থ। দাপুটে আমলাদের একাংশ অর্থ-বিত্তের পাশাপাশি তাদের জৈবলালসা চরিতার্থ করার জন্য মদ ও মেয়ে মানুষের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। এমপি-মন্ত্রীদের একাংশ যারা ছিলেন বিলাসী এবং অলস, যাদের ছিল না তেমন রাজনৈতিক পরিচিতি- তারা হঠাৎ করে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে দুর্নীতিবাজ ও চরিত্রহীন আমলাদের সাথে পাল্লা দিয়ে মদ ও মেয়ে তালাশ শুরু করে দেয়। ফলে অর্থনীতির এই নতুন কালোবাজারটি দখল করার জন্য মেয়ের দালালরূপী নরপিশাচদের আবির্ভাব ঘটে ব্যাপক হারে।
মেয়ে মানুষের দালাল যে কত ঘৃণ্য ও অমানবিক হতে পারে তা সাধারণ মানুষের মন-মস্তিষ্ক কল্পনাও করতে পারে না। আমার কৈশোর জীবনে বাংলা সাহিত্যের নামকরা সব সাহিত্যিকদের গল্প-উপন্যাসের নিয়মিত পাঠক ছিলাম। সেই সময়ে নিহার রঞ্জন গুপ্তের একটি উপন্যাসে জনৈক মেয়ের দালালের কাহিনী পড়ে মনের দুঃখে কয়েক রাত ঘুমাতে পারিনি। উপন্যাসে বর্ণিত দালালটি সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর সদস্য এবং কর্মজীবনে একসময় উঁচু পদে সরকারি চাকরি করতেন। তার পোশাক আশাক ছিল চৌকস এবং কথাবার্তা, আচরণ ছিল যারপরনাই আকর্ষণীয়। দুর্নীতির কারণে সে চাকরি হারিয়ে মেয়েমানুষের দালালি শুরু করে দেয়। এই জঘন্য দালাল নিজের সুন্দরী স্ত্রীর ছবি পকেটে নিয়ে ঘুরত এবং সমাজের উঁচুতলার মানুষদের অফিস-আদালত, রঙ-মহল, ক্লাব এবং নামী-দামি হোটেলে গিয়ে নারীলোভী লোকজনের কাছে ঘণ্টা দরে স্ত্রীকে ভাড়া খাটাত। নিহার রঞ্জন গুপ্ত তার অসাধারণ লেখনীর মাধ্যমে বিষয়টি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা পড়ামাত্র যেকোনো পাঠকের হৃদয় ভারাক্রান্ত হতে বাধ্য।
আমাদের ইদানীংকালের সমাজে গরুর দালালের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বটে; কিন্তু ভূমির দালাল ও মেয়েমানুষের দালালের সংখ্যা বেড়েছে। আজকের আলোচনায় আমরা মূলত রাজনৈতিক দালালদের নিয়ে কথা বলব, যারা নিজেদের কুকর্ম দিয়ে ইতোমধ্যে ভূমির দালাল ও মেয়েমানুষের দালালদের নির্মমতা ও নৃশংসতাকে অতিক্রম করে ফেলেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার আগে দালাল শব্দের ব্যাকরণগত অর্থ নিয়ে যেমন দু-চারটি কথা বলা আবশ্যক তেমনি দালালি-তেলবাজি, ধামাধরা, ভাঁড়ামি, পল্টিবাজি ইত্যাদি শব্দমালার গুণগত পার্থক্য নিয়েও পাঠকদের ধারণা দেয়া আবশ্যক।
ব্যাকরণে দালালের দুই প্রকার অর্থ রয়েছে। ইতিবাচক অর্থে দালাল বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝানো হয়, যে কিনা ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্রয়-বিক্রয় অথবা অন্যান্য কথাবার্তা-লেনাদেন-সমঝোতায় মধ্যস্থতাকারীরূপে কাজ করে। দালালের নেতিবাচক অর্থ রয়েছে বাংলা ব্যাকরণে। বাংলা ভাষায় খুব অল্প কয়েকটি শব্দ রয়েছে যেগুলোর ব্যাকরণগত অর্থ একাধিক এবং যা কিনা পরস্পরবিরোধী এবং সেগুলোর নেতিবাচক অর্থগুলো সাধারণত ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ অথবা ঠাট্টা-মশকরার কাজে ব্যবহৃত হয়। দুর্লভ সেই শব্দমালার মধ্যে দালাল নিঃসন্দেহে অন্যতম। নেতিবাচক অর্থে দালাল বলতে সেই নরাধমকে বুঝায়, যে কিনা অন্যায়ভাবে কারো পক্ষ-সমর্থন করে এবং অন্য মানুষকে অন্যায় কর্ম সম্পাদনে সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকে। নেতিবাচক অর্থে দালালি হলো এক জঘন্য মানসিক রোগ, যা কোনো দিন ভালো হয় না। যারা নেতিবাচক কর্মে দালালি করে থাকেন, তাদের রক্ত-মাংস, অস্থিমজ্জায় দালালির প্রবৃত্তি মিশে থাকে। এই কারণে তারা কোনো কারণ ছাড়া, স্বার্থ ছাড়া অথবা বিনা পারিশ্রমিকেও দালালি করে থাকে এবং তেলবাজি, ধামাধরা, ভাঁড়ামি অথবা পল্টিবাজির ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যক্তিগত লাভ-লোকসানকেন্দ্রিক হয়ে থাকে।
দুর্বল-অযোগ্য এবং অলস লোকেরা যখন বিনা পরিশ্রমে কোনো বড় জিনিস অথবা স্বার্থ হাসিল করতে চায় তখন তেলবাজি, ধামাধরা কিংবা ভাঁড়ামোকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এই শ্রেণীর লোকদের টার্গেট থাকে তিন প্রকার। প্রথমত, তারা সীমিত জ্ঞানের স্বার্থপর এবং রাগচণ্ডাল স্বভাবের ক্ষমতাবান বা বিত্তবান কাউকে টার্গেট করে এগোতে থাকে। দ্বিতীয়ত, তাদের কর্মের মূলে সব সময় কোনো-না-কোনো স্বার্থ জড়িত থাকে এবং তৃতীয়ত, তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে মালিককে বিপথে পরিচালনা করা এবং মালিকের আশপাশে থাকা শিক্ষিত-সজ্জন ও আপনজনদের ছলাকলা করে দূরে সরিয়ে দেয়া।
আলোচনার এই পর্যায়ে আমরা মূল প্রসঙ্গ অর্থাৎ রাজনৈতিক দালালি নিয়ে কথা বলব। এই শ্রেণীর দালালদের চাল-চরিত্র, হাল-চাল, কামনা-বাসনা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে বর্তমান দুনিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রীতিমতো গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন। কারণ, এসব দালাল দুনিয়ার মাশরেক থেকে মাগরেব পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ভূমিতে এমন বিপর্যয় ঘটাচ্ছে যা কিনা অন্য কোনো জন্তু-জানোয়ার, প্রাকৃতিক দুর্যোগ-মহামারী রোগ-বালাই অথবা অশরীরি শয়তান-ভূত-প্রেত-দৈত্যদানবেরা ঘটাতে সক্ষম নয়। এরা যুদ্ধ বাধিয়ে অস্ত্র বিক্রির লোভে লাখ লাখ নিরীহ মানুষ মেরে ফেলেছে। এরা দুনিয়ার অর্থব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা, ব্যাংক-বীমা ইত্যাদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য করছে না এহেন অপরাধ নেই। কালো টাকা, মদ-জুয়া, নারীপাচার, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস থেকে শুরু করে আধুনিক গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, ক্রীড়া ও বিনোদনজগৎ ইত্যাদি করায়ত্ত করার জন্য এই দালালেরা দানবীয় কায়দায় রাজনীতি কুক্ষিগত করে ফেলেছে। এদের করাল গ্রাসে আবদ্ধ হয়ে দেশ-বিদেশের রাজনীতিবিদেরা অনেকটা রঙ্গমঞ্চের নাচুনে পুতুলীর মতো অদৃশ্য সুতোর টানে ধ্যাতাং ধ্যাতাং নেচে-গেয়ে দেশ- জাতিকে ক্রমাগত রসাতলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
রাজনীতির দালালেরা অন্য শ্রেণী পেশার দালালদের চেয়ে বেশি মাত্রার বুদ্ধিমান এবং কূটকৌশলের অধিকারী হয়ে থাকে। তার ধৈর্য, সহ্যশক্তি এবং পরিস্থিতি মানিয়ে নেয়ার দুর্দান্ত ক্ষমতা রীতিমতো বিস্ময়কর। এই শ্রেণীর দালালরা সব সময় রাষ্ট্রক্ষমতাকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। তারা কোনোকালে সরকারবিরোধী রাজনীতি কিংবা বালা মুছিবতের রাজনীতির ধারে কাছে ঘেঁষে না। তারা ক্ষমতার চার পাশে আঠার মতো লেগে থাকে। কোনো কারণে যদি ক্ষমতাচ্যুত হয় তবে তারা হয় নিঃশেষ হয়ে পড়ে অথবা গা বাঁচিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যায়। এই শ্রেণীর দালালেরা সাধু-সজ্জনের বেশে সমাজ ও রাষ্ট্রে অবস্থান করে এবং সুযোগ বুঝে ক্ষমতাসীনদের সাথে হঠাৎ করে মিশে যায়। তাদের বুদ্ধিমত্তা, অর্থবিত্ত এবং সামাজিক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা ক্ষমতাসীনদেরকে যারপরনাই চমকিত করে ফেলে। পরে বিভিন্ন প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতা, বুদ্ধি-পরামর্শ ও কূটকৌশল প্রয়োগ করে তারা পুরো রাষ্ট্রক্ষমতা-রাজভাণ্ডার এবং ক্ষমতার এককগুলোতে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলে।
রাজনীতির দালালদের চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্যের উত্তম উদাহরণ হলো জগৎশেঠ। প্রাচীন দুনিয়ার কারুনকেও ওই শ্রেণীর মানুষ বলা যায়। জগৎশেঠের উদাহরণটি আমাদের কাছে সহজবোধ্য হবে বিধায় প্রথমে তার কথা এবং পরে ফেরাউন জমানার রাজনৈতিক দালাল কারুন সম্পর্কে কিছু বলে প্রসঙ্গের যথার্থতা প্রমাণের চেষ্টা করব। জগৎশেঠ মূলত একজন ধুরন্ধর মারোয়ারি ব্যবসায়ী তথা সুদের কারবারি ছিলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসনামলে হঠাৎ করে অনেকটা ঝড়ের বেগে সে রাজদরবার এবং সংশ্লিষ্ট রাজকর্মচারীদের ওপর প্রবল প্রতাপশালী হয়ে উঠল। তার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলার সিংহাসন ও রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে যথেচ্ছাচারের মাধ্যমে অঢেল অর্থ বিনা বাধায় এবং বিনা হিসাবে হাসিল করে তার জন্মভূমি গুজরাটসহ ভারতের অন্যান্য নিরাপদ অংশে পাচার করা। বিভিন্ন কারণে তরুণ নবাবের ওপর প্রথম দিকে প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও নবাব একসময় তার উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন।
ফলে জগৎশেঠ পিঠ রক্ষার জন্য ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে কিভাবে বাংলা তথা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছিল সেই কাহিনী আমরা কমবেশি সবাই জানি। ফেরাউন জমানার কারুনও ছিলেন জগৎশেঠের মতো ধনলোভী ধুরন্ধর রাজনৈতিক দালাল। তিনি মূলত বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন এবং নিজের ধুরন্ধরী বুদ্ধিক্ষমতা ও কৌশল ব্যবহার করে ফেরাউনের রাজদরবারে জায়গা করে নেন। তার ধনলিপ্সা এবং মন্দ চরিত্রের কাহিনী পবিত্র কুরআন শরিফেও বর্ণিত হয়েছে। তিনি স্বজাতীয় দরিদ্র বনি ইসরাইল জাতিকে দাসত্বের ফাঁদে ফেলে রাজদরবার থেকে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নেন। আবার সেই অর্থ ফেরাউনের বংশীয় লোকজন অর্থাৎ কিবতিদের মধ্যে বিনিয়োগ করে নিজের অর্থভাণ্ডার দিনকে দিন স্ফীত করে তোলেন। ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় হজরত মুসা আ: যখন সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছেন এবং প্রায় ১২ লাখ বনি ইসরাইলির অবিসংবাদিত এবং একচ্ছত্র নেতা হিসেবে ক্ষমতা লাভ করেন, তখন কারুন তার তল্পিতল্পাসহ আল্লাহর নবীর পক্ষে যোগদান করেন। কারুণ তার স্বভাব অনুযায়ী রাজনৈতিক দালালি করতে গিয়ে বনি ইসরাইলিদের জনজীবন কিভাবে তসরুপ করেছিলেন তা আমরা কম-বেশি অনেকেই জানি।
জগৎশেঠ ও কারুণের ইতিহাসের আলোকে আমরা যদি রাজনৈতিক দালালদের শ্রেণী বিন্যাস করি তবে তাদের প্রধান পরিচয় দেখতে পাই অসৎ ব্যবসায়ী হিসেবে। সীমাহীন লোভ, বিবেকহীন লালসা এবং অমানবিক কৃপণতা দিয়ে রাজনৈতিক দালালেরা দেশ-জাতির সহায় সম্পত্তি, মান-সম্মান এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সর্বনাশ করতে থাকে। তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন প্রধান ব্যক্তিকে যেকোনো মূল্যে করায়ত্ত করে নেয়। পরে অশরীরি প্রেতাত্মাদের মতো রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তির ওপর ভর করে তার মুখ দিয়ে নিজেদের কথাগুলো বলিয়ে নেয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পঞ্চ ইন্দ্রিয়, হাত পা এবং চলৎ শক্তির ওপর নিজেদের দুরভিসন্ধি, চক্রান্ত, লোভ-লালসা ইত্যাদি চাপিয়ে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক দালাল ও রাজনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যে পার্থক্য তো করতে পারে না বরং অনেকসময় তারা দালালকে প্রধান চরিত্র এবং প্রধান চরিত্রকে দালাল মনে করে নিজেরা নিজেদের কাছে প্রতারিত ও বিভ্রান্ত হয়ে থাকে।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877