স্বদেশ রিপোর্ট: নওগাঁর মান্দায় প্রেমিকার মা নাসিমা আক্তার সাথীকে (৪০) গলাকেটে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর ঘাতক প্রেমিক সামিউল ইসলাম সাগরকে (২২) আটক করেছে থানা পুলিশ।
সোমবার গভীর রাতে উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের দারিয়াপুর গ্রামে গৃহবধুর শোবার ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। সাথী গ্রামের এমদাদুল হকের স্ত্রী এবং ঘাতক সামিউল ইসলাম সাগর উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের চকশ্যামরা গ্রামের জান মোহাম্মদের ছেলে।
থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহতের স্বামী এমদাদুল হক নাটোর জেলায় একটি খামারে নৈশপ্রহরীর চাকরি করেন। বাড়িতে স্ত্রী নাসিমা আক্তার সাথী ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ুয়া মেয়ে থাকতো। মেয়ের সাথে সাগর নামে ওই যুবকের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। বেশ কিছুদিন থেকে সর্ম্পকের টানাপোড়েন শুরু হয়।
এর জেরে প্রেমিকাকে হত্যার উদ্দেশে একটি ধারালো ছুরি নিয়ে গভীর রাতে বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে ছাদে উঠে অপেক্ষা করছিল। পরে প্রেমিকার ঘরে গিয়ে দেখে প্রেমিকা নাই। প্রেমিকার মায়ের ঘরে দেখে মা ও মেয়ে শুয়ে আছে। জোর করে প্রেমিকাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কথা বলার সময় দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
এ সময় গৃহবধু ঘুম থেকে জেগে উঠলে সাগর তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে গৃহবধু অজ্ঞান হয়ে পড়লে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরে সাগর লাশের পাশেই অস্ত্রের মুখে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
নিহতের স্বামী এমদাদুল হক বলেন, বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়ে থাকতো সোমবার রাতেই স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে বলে মোবাইলে জানতে পারি। তিনি ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ঘটনার পর ঘাতক সামিউল ইসলাম সাগরকে আটক করা হয়েছে। গৃহবধুর মেয়েকে হত্যার উদ্দেশে ছুরি নিয়ে বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। মেয়ের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে গৃহবধু সাথী ঘুম থেকে জেগে উঠলে ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
পরে তাকে জবাই করে হত্যা এবং গৃহবধুর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। ঘাতক সাগরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাবাসাদে এমন তথ্য জানা যায়। আজ সকালে গৃহবধুর মেয়ের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘাতক সাগরকে আটক করা হয়। তবে প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ওসি।
তিনি আরো বলেন, সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত এবং ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেছেন।