বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাইডেন-ট্রাম্প বৈঠক, যেসব বিষয়ে আলোচনা হলো উপদেষ্টা নিয়োগ প্রসঙ্গে কী বললেন নুর বিদেশে আসিফ নজরুলকে হয়রানি : জেনেভার কাউন্সেলরকে প্রত্যাহার হাজী সেলিমের ছেলে সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম গ্রেফতার চায়ের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসায় বিএনপি নেতারা জাতীয় নির্বাচন কবে, জানালেন প্রধান উপদেষ্টা আন্দোলনে আহতদের দেখতে হাসপাতালে বিএনপি নেতারা, ৫ লাখ টাকা অনুদান কুইক রেন্টালে দায়মুক্তির বিধান অবৈধ : হাইকোর্টের রায় জানুয়ারির প্রথম দিকেই নতুন বই পাবে ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শ্রমিক আন্দোলনে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ : বিপদে পড়বে ভারত!

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ : বিপদে পড়বে ভারত!

মার্কিন পণ্যের ওপর নতুন করারোপ করার ভারতীয় সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্যযুদ্ধ ত্বরান্বিত করবে। এই লড়াই হিতে বিপরীত হতে পারে।
বাদাম, আপেল ও আরো কিছু রাসায়নিকসহ ২৮টি পণ্যের ওপর ভারত নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছে। রোববার থেকে এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে। নয়া দিল্লি অবশ্য বলেছে, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে করারোপ করেছে, তার প্রতিশোধ হিসেবই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এর ফলে ভারতকে অনেক বেশি কিছু হারাতে হতে পারে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের ভারত প্রধান প্রিয়াঙ্কা কিশোর বলেন, উচ্চতর করারোপের ভারতের সিদ্ধান্তটি একটি কৌশলগত ভুল হিসাব। এ ধরনের কঠোর সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় ভালোর চেয়ে খারাপই হবে বেশি।

অনেক বড় টার্গেট
চীনের (এই দেশটির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে) মতো ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমদানির চেয়ে রফতানি করে বেশি। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, রফতানি করেছে ৫৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। দুই দেশের মধ্যে পরিষেবা বাণিজ্য হচ্ছে ৫৪.৬ বিলিয়ন ডলারের।আর তা অনেকটাই ভারতের অনুকূলে। এতে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস, ইনফয়েস ও উইনপ্রো।
কিশোর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য শ্রমঘন রফতানি পণ্য- বিশেষ করে রত্নপাথর, অলঙ্কার ও বস্ত এবং আইটি পরিষেবা খাতকে বেছে নেয়, তবে ভারতের অর্থনীতিতে অনেক বেশি ক্ষতি সাধন করবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির কথা বলছেন। তিনি মোটরসাইকেল ও অ্যালকোহলের মতো পণ্যের ওপর ভারতের করারোপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভারতের অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) প্রত্যাহার করেছেন। ওই সুবিধা গ্রহণ করে ভারত ৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করতে পারত। আমেরিকান মেডিক্যাল ও ডায়েরি শিল্পের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।

কঠোরতর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত
প্রতিশোধ গ্রহণের সীমিত প্রকৃতির অর্থ হলো নতুন করারোপ অনেকটাই প্রতীকি। ভারত জানিয়েছে, তারা যেসব পণ্যকে টার্গেট করেছে, সেগুলোর মূল্য প্রায় ২৪০ মিলিয়ন ডলার।
নয়া দিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক রিলেশন্সের পরিচালক রজত কাঠুরিয়া বলেন, আমি মনে করি, এটি হলো ভারতের কাছ থেকে যাওয়া একটি বার্তা। তা হলো, কঠোর না হলেও আমরা প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি, আমরা আমাদের জবাব দিচ্ছি।
সম্প্রতি বিপুল ভোটে পুনঃনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টিভঙ্গিতেও যে পরিবর্তন এসেছে, তাও এতে প্রতিফলিত হয়েছে।মোদি সরকার এক বছর আগে শুল্কারোপের কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছিল। তখন উভয় পক্ষই একের পর এক বৈঠক করে একটি সমাধান বের করার চেষ্টা করেছিল।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দি উইলসন সেন্টারের এশিয়া প্রগ্রামের উপপরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, মূল্যের দিক থেকে খুব বড় না হলেও ঘটনাটির তাৎপর্য বিশাল। কারণ এর আগে পর্যন্ত ওয়াশিংটনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দিল্লির প্রতিক্রিয়া ছিল দর্শনীয় মাত্রায় সংযত।

ক্ষয়িঞ্চু অর্থনীতি
ভারতের হাতে খেলার মতো অনেক কার্ডই আছে। ভারতের বিশাল বাজারের সুবিধা গ্রহণ করতে চাইবে আমেরিকান ব্যবসায়ীরা। ৬০০ মিলিয়ন শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর দেশটিতে আমাজন, ওয়ালমার্ট, গুগল, ফেসবুকের মতো কোম্পানি ইতোমধ্যেই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
তবে প্রতিবেশী চীনের যে শক্তি আছে, তা কিন্তু ভারতের নেই। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন প্রতিশোধ গ্রহণ করতে ১১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যকে টার্গেট করেছে, এছাড়া তার দেশের ভেতরে বিদেশী কোম্পানিগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দিয়েছে।
কাঠুরিয়া বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ত্বরান্বিত হলে চীনের মতো আলোচনায় বসার মতো স্থান পাবে না ভারত।
ভারতের অর্থনীতির বাণিজ্যযুদ্ধ অপ্রয়োজনীয়।

মার্চে শেষ হওয়া কোয়ার্টারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে মন্থর। এর মানে হলো, বিশ্বের দ্রুততম প্রবৃদ্ধির দেশের মর্যাদা চীনের কাছে হারিয়েছে ভারত।
আর সরকারি হিসাবে যে চিত্র দেখানো হচ্ছে, বিষয়টি তার চেয়েও খারাপ হতে পারে। সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা চলতি মাসের প্রথম দিকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছৈন যে ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোর প্রবৃদ্ধি অনেক বেশি করে দেখানো হয়ে থাকতে পারে। ২০১১ ও ২০১৭ পর্যন্ত ভারতের প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগ হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এটি আসলে হয়েছিল ৪.৫ ভাগ।এক গবেষণাপত্রে এই দাবি করেছেন অরবিন্দ সুব্রামেনিয়াম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877