একাদশ জাতীয় সংসদকে অবৈধ, জাতিকে এ কথা জানাতেই শপথ নেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
শপথ না নেওয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে বলেন, ‘এ সংসদ অবৈধ তা জাতিকে জানাতেই আমি শপথ নেইনি। ’ বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
সমাবেশে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের ব্যাপারেও কথা বলেন ফখরুল। তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্য উপক্ষো করে তিনি জাতীয় সংসদে গিয়ে শপথ নিয়েছেন। এই সংসদ সদস্যকে শপথ না নেওয়ার জন্য দল থেকে বারণ করা হয়েছিল। কিছুদিনের জন্যও অপেক্ষা করেননি তিনি। ’
তার বহিস্কারাদেশ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাহিদুর রহমানের প্রতি বিএনপির যথেষ্ট সহানুভূতি ছিল। দলের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের পর তার বহিস্কার আদেশ বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।’
বিএনপির বাকি সংসদ সদস্যদের সংসদে যোগদান করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে ফখরুল বলেন, ‘সরকারের দমন-নিপীড়নে বিএনপি রাজপথে দাঁড়াতে পারছে না। সভা-সমাবেশ আয়োজন করলেও তা ভল্ডুল করে দিচ্ছে স্বৈরচার এই সরকার। ’ এ সময় আবারও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধারক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন বিএনপির এই জেষ্ঠ্য নেতা।
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অপ্রতিরোধ্য জনগণকে ভোট বিপ্লব থেকে সরিয়ে দিতে বেগম খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে এই অবৈধ সরকার। স্বত:স্ফুর্ত ভাবে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অধীর অপেক্ষায় ছিলেন এ দেশের মানুষ। কিন্তু বন্দুক-পিস্তল ঠেকিয়ে জনগণের ভোট উৎসব ডাকাতি করেছে আওয়ামী লীগ ও তাদের পেটুয়া বাহিনী। ঢাকা থেকে বিশেষ বাহিনী আনা হয়েছিলো শুধু মাত্র আমাকে ভোটে হারিয়ে দেয়ার জন্য। নির্বাচন হয়ে গেলেও এ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তবে ঠাকুরগাঁর রাণীশংকৈল উপজেলার কিছু মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন শুধু মাত্র সাংগঠনিক শক্তির কারণে। ’
দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। ’এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক শাহ জাহান আলীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান,সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ হক মাসুদ, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক প্রমুখ।