অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। তবে সেটা করের হার বাড়িয়ে নয়। বরং সেটা করের আওতা বিস্তৃতির মাধ্যমে। এজন্য এবার নজর দেওয়া হবে সকল উপজেলায়ও। আমাদের কর জিডিপির অনুপাত কম। সেই অভিযোগ খণ্ডন করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অর্থমন্ত্রী। যারা কর প্রদানে যোগ্য তাদের সবাইকে করের আওতায় আনার দৃঢ়তা ঘোষণা করেছেন তিনি। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর বাড়াতে বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে এই করমুক্ত সীমা বাড়ানো হয়নি। অর্থবিল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আমদানি করা সুগারে স্পেসিফিক ডিউটি ২০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। লিফাইন সুগার স্পেসিফিক ডিউটি সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। উভয় সুগারের ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।
ফলে এখন কম্পিউটার ও ল্যাপটপ কিনলে ওই পরিমাণ অর্থের বিপরীতে কর রেয়াত পাওয়া যাবে না। বাজার থেকে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বাজারের চেয়ে কম মূল্য দেখালেও ওই কম পরিমাণ মূল্য ক্রেতার আয় বলে ধরে নেওয়া হবে। ওই আয়ের ওপর ক্রেতাকে কর দিতে হবে। রাইড শেয়ারিংয়ের (উবার, পাঠাও) উৎসে কর ১ শতাংশ এবং ভ্যাট আড়াই শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আগে ৫ শতাংশ ছিল।
এবার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। যেসব হাসপাতালে প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের সুবিধা থাকবে না ওইসব হাসপাতালকে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কর দেওয়ার বিধান করা হয়েছিল গত বাজেটে। এটি আগামী অর্থবছর থেকে কার্যকর করার কথা। যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের সুবিধা থাকবে না তাদের এই বাড়তি কর দিতে হবে। সর্বনিম্ন করহার অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশনে ৪ হাজার টাকা ও সিটি করপোরেশনের বাইরে অন্যান্য ৩ হাজার টাকা কর দিতে হবে।
গত তিন বছর ধরে এটি বহাল রয়েছে। যাদের নিজ নামে দুটি করে গাড়ি বা সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ৮ হাজার বর্গফুট আয়তনের গৃহসম্পত্তি রয়েছে তাদের সারচার্জ দিতে হবে। সিগারেট বিড়ি জর্দা গুলসহ তামাকজাত পণ্য তৈরির সঙ্গে জড়িতদের আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হবে। সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উৎসেকর দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে কথা বলা ও স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রেও বাড়ানো হয়েছে করের হার। এছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগসহ সরকারি বিভিন্ন সেবা নিতে লাগবে কর দেওয়ার নম্বর (টিআইএন)।