শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কারাগারে হামকার মাদকের কারবার

কারাগারে হামকার মাদকের কারবার

চট্টগ্রামের কুখ্যাত হামকা বাহিনীর প্রধান নুরুল আলম ওরফে হামকা নুরুল আলম দুটি অস্ত্র ও গুলিসহ ২০১১ সালে রুবি গেট এলাকায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। দুবছর পর জামিনে বের হওয়ার সময় জেলগেট থেকে ফের তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হামকা আলম কারাগারে বন্দি থাকায় পুলিশ অপেক্ষাকৃত স্বস্তিতে থাকার কথা। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি খবরে বরং অস্বস্তি বেড়ে গেছে পুরো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। কারাগার থেকেই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়াবা ও গাঁজার কারবার। সহযোগী? খোদ কারারক্ষীরা। কারাগারে থেকেও কারবার চালাতে হরহামেশাই মোবাইল ফোনে বাইরের মাদক কারবারিদের সঙ্গে চলে তার কথাবার্তা।

গত শনিবার রাতে কোতোয়ালী থানা পুলিশ নগরীর কদমতলী এলাকায় সাইফুল ইসলাম (২২) নামের এক কারারক্ষীকে ৫০ পিস ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার করে। একটি সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশির সময় সাইফুল আটক হন। এ সময় তার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে।

ওই কলের সূত্রে পুলিশ আরও জানতে পারে, এক ব্যক্তি সাইফুলের কাছে আসছেন গাঁজা সরবরাহ করতে। পুলিশ কৌশলে আজিজুল ইসলাম জালাল নামের ওই ব্যক্তিকেও আটক করে। এর পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল।

কারারক্ষী সাইফুল জানান, কারাগারের ভেতরে মাদকের দেদার কারবারের কা-। সাইফুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার পুলিশ দিদারুল আলম মাসুম ওরফে আবু তাহের মাসুম ও আলো আক্তার নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে কারাগারের ভেতরে মাদক সরবরাহের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ ঘটনায় গতকাল কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম, বন্দি হামকা নুরুল আলম, আজিজুল ইসলাম জালাল, দিদারুল আলম মাসুম ও আলো আক্তার। হামকা আলম কারাগারে থেকেও অপরাধ কার্যক্রমে জড়িত থাকায় এ মামলায় আসামি হয়েছেন।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে, হামকা আলম কারাগারের ভেতরে বসেই কারাগারের ভেতরে ও বাইরে মাদক কারবার চালান।

তিনি বলেন, সাইফুল মাদক কারবারি দিদারুল আলম মাসুমের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে তা থেকে হালিশহর এলাকায় জনৈক লিটনের কাছে ১০ পিস বিক্রি করে টাকা নিতে যাচ্ছিলেন। অবশিষ্ট ৪০পিস ইয়াবা হামকা আলমকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। তার আগেই সাইফুল ধরা পড়েন। তিনি বলেন, আমরা আরও তথ্য জানার লক্ষ্যে সাইফুলের রিমান্ডের আবেদন করব।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম কারাগারের ৯ হাজার বন্দির ৭০ শতাংশই মাদক কারবারি ও মাদক সেবী। ফলে ব্যবসাটা ভেতরে ভালোই জমিয়ে দেন হামকা নুরুল আলম। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে হামকা আলমকে সেলে রাখা হয়েছে।

আটক কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম পুলিশকে জানিয়েছেন, সেলে বসেই গত দুবছর ধরে মাদক কারবার করেন হামকা আলম। সাইফুল সেই মাদক বাইরে থেকে সরবরাহ করেন। কেবল হামকা আলমই নন, আরো অনেকেই আছেন এ কারবারে। তবে সাইফুল আলম গত দুইবছরের ঘটনার বর্ণনা দিলেও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হামকা আলমের মাদকের কারবার অনেক আগে থেকেই। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে তার কাছে ৪০০ পিস ইয়াবা ও ৩ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, সাইফুলের মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা নীরিক্ষা করে দেখা হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877