ফেনীর সোনাগাজী থানার সেই সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। যেহেতু ওসি মোয়াজ্জেমের নামে সোনাগাজী থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, তাই ওই থানার পুলিশের হাতেই তাকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদার।
আজ রোববার বিকেলে তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘তারা (সোনাগাজী থানা পুলিশ) রওনা দিয়েছে, আসলেই হস্তান্তর করা হবে। যতক্ষণ হস্তান্তর করা হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত শাহবাগ থানাতেই থাকবেন ওসি মোয়াজ্জেম।’
তাকে কোন আদালতে নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ওয়ারেন্টটা তাদের (সোনাগাজী থানা) কাছে, কাজেই তারাই সিদ্ধান্ত নেবে যে কোন আদালতে হাজির করা হবে।’
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর আজ রোববার রাজধানীর শাহবাগের হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয় ওসি মোয়াজ্জেম।
এর আগে, পুলিশ সদরদপ্তরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সোহেল রানা দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে তার গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সোহেল রানা জানান, মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
গত ৬ এপ্রিল এইচএসসি সমমানের আলিম আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা নুসরাত জাহান রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান।
এর কিছুদিন আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।এরপর থেকে পলাতক ছিলেন মোয়াজ্জেম। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না পুলিশের, এমনকি তিনি আত্মসমর্পণও করেননি।
পরে গত ৮ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি সেখান থেকে নিরুদ্দেশ হন।