স্বদেশ ডেস্ক:
মাঠের পর মাঠ সরিষার ক্ষেত। হলুদে হলুদে ভরে গেছে মাঠ। আর মধু চাষীরাও ব্যস্ত সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহে। যশোরে জেলার শার্শা, কেশবপুর, ঝিকরগাছা উপজেলারর বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই সরিষার ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা হয়ে দেখা দিয়েছে। মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা গেছে, যশোরের আট উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। গত বছর ৯ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। চলতি বছরে ১ হাজার ২৬৮ হেক্টর জমিতে ৯৭৯টি বক্স বসিয়ে মৌচাষ করা হচ্ছে। সরিষার ফুল থেকে এবার ৪ হাজার কেজি মধু আহরণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। গেল বছরে যশোরে মধু আহরণ করা হয় ৩ হাজার ৬১২ কেজি। আর সরিষার ফলন বাড়বে প্রায় ১৫ শতাংশ।
যশোর ঝিকরগাছা উপজেলার মৌ চাষি জিল্লুর জানান, চলতি মৌসুমে বারি-১৪ সরিষা তিন বিঘা জমিতে চাষ করেছি। জমির পাশে ২১ টি মৌচাষের বক্স বসিয়ে ১৩ কেজি মধু পেয়েছে। আরো এক মাস ধরে সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। এসময় অন্তত আরো ১০ থেকে ১৫ কেজি মধু পাওয়া যাবে।
একই গ্রামের কৃষক আবু তালেব জানান, অধিকাংশ সরিষা ক্ষেতের মাঠের পাশের মৌ চাষের এমন বক্স স্থাপন করা হয়েছে। বক্সে থাকা লাখ-লাখ মৌমাছি সরিষা ফুলে বসে মধু সংগ্রহ করছে। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। আর সরিষার উৎপাদন বাড়ছে।
যশোর সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবু ইছা জানান, মৌচাষে কৃষকদের এতটা আগ্রহ ছিল না। তাদেরকে বোঝানোর পর তারা মৌচাষ করছে। খরচ কম, ঝামেলা নেই তারপর ৫-৭দিন পর পর মধু সংগ্রহ করা যায়। এটি একটি লাভজনক চাষ তাই যশোরের কৃষকরা মৌচাষে ঝুকে পড়ছে।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে সরিষার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই জমিতে সরিষা ও মধু চাষ করলে ১৫ শতাংশ সরিষা ফলন বাড়ে। তাই সরিষার পাশাপাশি মধু চাষে কৃষকদের উদ্ধৃদ্ধ করা হচ্ছে। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ লাভজনক ব্যবসা হয়ে দেখা দিয়েছে। এতে কৃষক একদিকে মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অন্য দিকে ফলন ও বেশি হচ্ছে।