বিশ্বকাপের অন্যতম উত্তেজনাকর ম্যাচে আজ ম্যানচেস্টারে মাঠে নামছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। আর এই ম্যাচের আগে সীমান্তের দুই পারের সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। ধারাভাষ্যকার হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন আকরাম।
পুরনো দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচকে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘বড় ম্যাচ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন পাকিস্তানি সাবেক এই তারকা পেসার। যদিও দুই দেশের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের এক অলিখিত লড়াইয়ের পাশাপাশি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের বৈরিতা বিবেচনায় ওয়াসিম বলেছেন, ম্যাচটি অবশ্যই সবার উপভোগ করার উচিত। এখানে অন্যকোনো বিষয় নিয়ে কথা না বলাই ভালো।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম বলেছেন, এর চেয়ে বড় ম্যাচ আর হতে পারে না। বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই পুরো ক্রিকেট বিশ্বের দৃষ্টি এই ম্যাচের ওপর আবদ্ধ হয়ে যাওয়া। উভয় দেশের সমর্থকদের উদ্দেশে একটি কথাই বলতে চাই, এটা কোনো যুদ্ধ নয়, একটি ম্যাচ। সে কারণে সবাই যাতে ম্যাচটি উপভোগ করে। এখানে একটি দল জিতবে, আরেকটি পরাজিত হবে। এখানে উত্তেজিত হয়ে কিছুই হবে না। যারা ম্যাচটিকে যুদ্ধের তকমা দিচ্ছে, তারা ক্রিকেটের সত্যিকার সমর্থক নয়।’ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচের সব টিকিট অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। সূত্রমতে জানা গেছে, কালোবাজারিরাও এই ম্যাচ ঘিরে বেশ সরব হয়ে উঠেছে। সাবেক পেস বোলার ওয়াসিম স্বীকার করেছেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আলাদা একটি চাপ সব সময় থাকে।
তিনি বলেন, এই চাপ আমার চেয়ে বেশি কে উপলব্ধি করতে পারে। খেলোয়াড়ি জীবনে সব সময় আমি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য মুখিয়ে থাকতাম। কারণ এই ম্যাচে উভয় দলের সেরা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসত। ১৯৯২ সালের পর এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের ৬টি ম্যাচে কোনোটিতেই ভারতকে পরাজিত করতে পারেনি পাকিস্তান। কিন্তু ওয়াসিম মনে করেন, আজ ম্যাচে ভারতকে পরাজিত করতে হলে পাকিস্তানের নিজস্ব আগ্রাসনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৩ সালে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পরাজিত পাকিস্তানি দলের অন্যতম সদস্য ওয়াসিম বলেন, এই একটি উপায়ে ভারতকে বধ করা যায়। ১৯৯৬ সালের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পরাজিত পাকিস্তানি দলে কাঁধের ইনজুরির কারণে ছিলেন না ওয়াসিম।
তিনি বলেন, অবশ্যই ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর স্মৃতি আমি খুব একটা মনে করতে চাই না। তবে প্রতিটি ম্যাচই আমি বেশ উপভোগ করেছি। তার মতে, ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ থাকলেও পাকিস্তানি বোলাররা নিজেদের দিনে সম্ভাব্য অনেক কিছুই করতে পারে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল তারই প্রমাণ। যে দল ম্যাচের চাপ ভালোভাবে সামলে উঠতে পারবে, তারাই জয়ী হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ভারত তিন ম্যাচ থেকে পাঁচ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরাজিত পাকিস্তান ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ পর্যন্ত একটি মাত্র জয় পেয়েছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল।