জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন রাম দা দেখিয়ে একটি পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া তিনিসহ তার সহযোগীরা জমির মালিক ও তার স্বজনদের মারধরও করেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১০ জন।
গতকাল শনিবার বিকেল ৫টায় এ ঘটনা ঘটে উপজেলার মাজালিয়া গ্রামে। ঘটনার পর পর গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন ভুক্তভোগীদের কয়েকজন।
advertisement
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার মাজালিয়া বিলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের কাছ থেকে ১৯৫৩ সালে হাসড়া মাজালিয়া মৌজার ৬১ শতাংশ জমিটি সাফ কওলা হিসেবে নেন মৃত মনিরুদ্দিনের ছেলে মৃত মোজাফ্ফর ও মৃত জৈন শেখ। এরপর থেকে জমিটি তাদের মালিকানায় ছিল। তারা জমিতে বসতবাড়ী, পুকুর, কবরস্থান স্থাপন করেন। এ ছাড়া ফলজ ও বনজ বৃক্ষও রোপণ করেন।
সম্প্রতি জমির পূর্বের মালিক আব্দুর রহমানের আয়নাল হক, নাতি মজনু মিয়া জমিটি ফিরে পেতে মোজাফ্ফর ও জৈন শেখের পরিবারকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিচ্ছিলেন।
জমি নিয়ে বিভিন্ন সময় গ্রাম্য সালিশও হয়। এতে মোজাফ্ফর ও জৈন শেখের ছেলে সাইফুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, তোষর আলী, শফিকুল ইসলাম, চান মিয়া, আলতাব হোসেন, তোতা মিয়া ও লাল চান মিয়া নিজেদের জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দাবি করেন।
ওই সালিশে আয়নাল হক, নাতি মজনু মিয়ার পক্ষে ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন ও তার ভাই মিনহাজ আহম্মেদ বকস উপস্থিত ছিলেন। সালিশে সাইফুল ইসলামসহ তার অন্যান্য ভাইয়েরা জমি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান।
পরে কামাল ও মিনহাজের নেতৃত্বে তাদের সহযোগী মজিবর রহমান, হবিবর রহমান, আব্দুল মান্নান, ফারুক হোসেন, জয়নাল আবেদীন, ফরিদ হোসেন, আলী আকবরসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী রাম দা ও লঠিশোঠা নিয়ে তোষর আলীর বাড়িতে হামলা করেন।
তারা তোষর আলীর বাড়ি ভাংচুর করে ও ঘর থেকে ৫ লাখ টাকা লুট করেন।এ ছাড়া তাদের জমিতে রোপণ করা অর্ধ শতাধিক ফলজ ও বনজ গাছ, কলা ও সবজি বাগানের গাছ কেটে ফেলেন। স্থানীয় গাছ কাটার করাতি সুজা মিয়া, আব্দুল খালেক গাছ কাটার কাজ করেন। একই সঙ্গে একটি ছাপড়া ঘর ভেঙে জমি জবর দখলের চেষ্টা করেন কামাল ও মিনহাজ।
এ সময় আলতাব হোসেন, তোতা মিয়া ও লাল চান মিয়া তাদের বাধা দিতে গেলে যুবলীগ নেতা কামাল রাম দা দেখিয়ে তাদের ভয় দেখান ও মারধর করেন। এ ঘটনায় আলতাব, রুবেল, কাদের, তোতা, চানমিয়া, ঝর্ণা, রওশন আরা, অনিক, তৌকির ও রিপন। এদের মধ্যে গুরুতর আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভয়ে পালিয়ে গেছেন তাদের কজন আত্মীয়।
জানতে চাইলে ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের ডোয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কামাল হোসেন জানান, তাকেসহ সহযোগী মজনু, মজিবর, আলী আকবর ও ময়নাকে মারধর করা হয়েছে। সাংবাদিকতের প্রকৃত ঘটনা পত্রিকায় লিখতেও অনুরোধ জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নাই। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’