রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ অপরাহ্ন

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

স্বদেশ ডেস্ক:

আজ ১০ জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিনে তিনি পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন। জীবন-মৃত্যুর কঠিন চ্যালেঞ্জের ভয়ঙ্কর অধ্যায় পার হয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে দেশে ফিরলে জীবনের স্বপ্ন, সাধনা ও নেতৃত্বের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশের অধীর অপেক্ষায় থাকা লাখো মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ময়দান পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা জানান।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা শুরু করে। ২৬ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে আটক রাখেন। কিন্তু দলমত নির্বিশেষে বাঙালিদের কঠোর আন্দোলনের মুখে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বিকেল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে তিনি ভাষণ দেন। সশ্রদ্ধ চিত্তে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতার জন্য সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটিই হোক এবারের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সবার অঙ্গীকার। রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তার আদর্শ মুছে দিতে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে অপচেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বাঙালি বীরের জাতি। যত দিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে তত দিন বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

বাঙালির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ১০ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তিনি বিশ্বাস করতেন, ছয় দফা ও এগারো দফার মাধ্যমে শাসনতন্ত্র প্রস্তুত করতে বাংলার জনগণ তাকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক জান্তা জনগণের এ রায় উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে প্রহসন চালায়। বাংলার গরিব-দুঃখী নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন এবং সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন; সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বেলা ৩টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন এবং গৃহীত কর্মসূচি সফল করতে দলীয়, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থকসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877