শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন

পারকিতে বেড়াতে

জাহেদুল হক : অবিশ্বাস্য সুন্দরের দেখা পেতে ডাকছে পারকি সমুদ্রসৈকত। চট্টগ্রামের এই সাগর সৈকতে যেতে এখন সাগর নৌযানে পাড়ি দিতে হয়। কদিন পর বঙ্গবন্ধু টানেলে কর্ণফুলীর নিচ দিয়ে আসতে পারবেন। বিমানেও খুব কাছে হবে।
সাগর সৈকতে বেড়ানোর আনন্দ খুঁজে পাওয়ার কথা ভাবতেই চোখে ভাসে সবার–বিশ্বের দীর্ঘতম সাগর বেলাভূমি ‘কক্সবাজার’। দেশের নানা জায়গা থেকে সেখানে বেড়াতে কয়েকদিন হাতে রেখে যেতে হয়। খরচ হয়। তাহলে বিকল্প? খুব কম খরচে, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মানুষ হলে দিনে দিনে সৈকতে বেড়াতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পরুয়াপাড়া ও গহিরা গ্রামের ‘পারকি সৈকত’-এর জুড়ি নেই। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চোখ জুড়ানো ‘পারকি সৈকত’। পতেঙ্গার যেকোনো জেটিঘাট থেকে সাগর উপকূল ধরে নৌযানে বেড়ানোর বিরল অভিজ্ঞতা নিয়ে পারকিতে পৌঁছাতে মাত্র ৩০ মিনিট। সৈকত ঘুরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে নৌযানে ফেরা আরও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। তবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় শান্ত সাগর ও বড় জাহাজের জলে হঠাৎ ধাক্কায় আহত হওয়া থেকে সতর্ক, সচেতন থাকতে হয়।
পারকি সাগর সৈকতে বঙ্গোপসাগরের ফেনিল ঢেউ আছড়ে পড়া দেখার পাশাপাশি বাড়তি দুটি ‘বোনাস’–চট্টগ্রাম বন্দরের বাইরে খোলা সাগরের বুকে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ বহর; রাতে বিরাট জাহাজগুলোর আলো ঝলমলে মেলা; অপরূপ দৃশ্যপট। বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদী বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যেখানে মিলেছে, তুমুল সেই মোহনায়–বড়, মাঝারি, ছোট; দেশি-বিদেশি জাহাজ, নৌযান, সাম্পান ও ট্রলারের অবিরাম ছোটাছুটি চলে সারাক্ষণ, রাতে ওরা নীরব। মাঝি-মাল্লা ও জেলে ভাইদের ‘বদর, বদর হেঁইও’ দোয়া ও আহ্বানে মাছ শিকার, নৌযান চালানো গরিব এই লোকদের জন্য মনের গভীরে ক্ষত ও ভালোবাসা তৈরি করে। এই অসুখ ও সুখ কক্সবাজার, কুয়াকাটায় আছে।

দেশের সম্পদ পারকি সাগর সৈকত– লম্বায় ১৩ কিলোমিটার হবে বা ৮.৭৭ মাইল চওড়া। পারকি সৈকতের অনন্য প্রাকৃতিক সুবিধা হলো– এটি বালুকাবেলায় গড়া বা বালির সৈকত (ইংরেজি স্যান্ডি বিচ)। দুঃখের কথা কী বলব ভাই– পারকির চেয়ে অনেক ছোট আকার ও আয়তনের সাগর সৈকত আছে ভারত, থাইল্যান্ডের মতো অনেক দেশে। তবে সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করে তারা প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটককে আকৃষ্ট করে মিলিয়ন, বিলিয়ন ডলার আয় করে যাচ্ছে। আমরা তাদের চেয়ে পিছিয়ে থাকব না সে আশায় ও বিশ্বাসে বলি– পারকি ও আশপাশের ২০ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দেশের বন বিভাগ এর মধ্যে সৃজন করেছে ঝাউবীথি, কেয়াসহ বিরাট ম্যানগ্রোভ গাছের বাগান। যে কারোর নজর কাড়বে। বনে ও সৈকতে আছে ‘সাগর, গঙ্গা কবুতর, কুন্তি, জিরিয়া, পাতারি, রাজহাঁস, নীলশির, কানি, ধূসর, সাদা বক, জল ময়ূর, ডুবুরি,পানকৌড়ি, ঈগলসহ হরেক পাখি; সারা বেলা তাদের কুহুতান। সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের আগায় ছোটে রং-বেরঙের ছোট কাঁকড়ার দল। সৈকতে তাজা ও জ্যান্ত বাগদা, গলদা, চাগা ও ললিয়া চিংড়ি, সাগরের মাছ জেলেরা বিকিকিনি করেন। ওপরে বাঁশের ছাউনি ঘেরা কয়েকটি দেশি হোটেল আছে। খাওয়া চলে কড়কড়ে ও গরম মাছ ভাজা, ভাত, ডাল।

কেমন করে সৈকতের বেঁচে থাকা শুরু হলো? ১৯৮১ সালে সরকারের বন বিভাগে পারকি উপকূলে প্রথম ঝাউবাগান বুনলেন। পারকি সৈকতে বোনা ঝাউগাছগুলো পিকুলা বা লাল ঝাউ প্রজাতির, গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। তারা লবণাক্ত, গরম আবহাওয়ার ভূমিতে ভালো জন্মে। তাই এই বনের জন্ম দিলেন তারা। বনের গাছগুলোর শেকড়, ডাল লম্বাটে। পাতা চিকন, গোল হয়ে থাকে। ডালের আগা চিকন। এক একটি গাছ ১৮ মিটার বা প্রায় ৬০ ফিট লম্বা হয়। সারা বছর পাতা থাকে বলে গাছগুলো চিরসবুজ। প্রবল বাতাস ঠেকাতে খুব কার্যকর। টানা ১৩ বছর বনটি বন বিভাগই দেখাশোনা করেছেন। এরপর ১৯৯৩-’৯৪ অর্থবছরে, মাঝে বিরতি দিয়ে ২০০২ সালে পারকি সৈকতের মোট ৮০ হেক্টর সাগর বেলাভূমিতে আরও ঝাউবন বুনল সরকার। ধীরে ধীরে ঝাউবীথি বড় হয়ে উঠল আকাশ, জলের ভালোবাসায়। পর্যটককের পা পড়া বাড়তে লাগল। পারকি সৈকত মন কাড়ল অসংখ্য পর্যটকের। খ্যাতি বাড়তে লাগল সাগরের এই বালুর বুকের। তবে এখনো দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক পারকির নাম জানেন না। তাদের কাছে এই অনিন্দ্য সুন্দর অজানা, অচেনা। বাংলাদেশের জন্য গভীর পরিতাপের। বাস্তবতা হলো– দক্ষিণ চট্টগ্রামের পারকি সৈকত সব দিক থেকেই অনাদর, অবহেলা; অনুন্নত হয়ে পড়ে আছে। গত ৩৮ বছরেও পারকিতে সৈকত ব্যবস্থাপনা গড়েই ওঠেনি। সরকার এদিকে বেখেয়াল; বেসরকারি উদ্যোক্তারাও নজর দিচ্ছেন না। ফলে বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রাম অংশের অবিশ্বাস্য এই সুন্দর পড়ে আছে চরম অব্যবস্থাপনায়। ফলে পর্যটকদের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে না। সব মিলিয়ে পারকি ও আশপাশে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে শঙ্খ নদের মোহনা পর্যন্ত রাঙ্গাদিয়া, মাঝের চর,পারকির চর, পরুয়াপাড়া বাতিঘর, ছিপাতলী, গলাকাটা, গহিরা দোভাষী বাজার ঘাট, উঠান মাঝি, বাচ্চু মাঝির ঘাট, বার আউলিয়া হয়ে দক্ষিণ গহিরার নজু মিয়া খাল পর্যন্ত সুবিশাল পুরো এলাকাটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা আকর্ষণীয় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রে বিকশিত হওয়ার পথে রয়ে যাচ্ছে হরেক বাধা, নানা বিপত্তি ও সীমাবদ্ধতা। পারকির প্রধান সমস্যাগুলোর এক নম্বর– হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট নেই। সাগর সৈকতে বেড়ানো ও জীবনযাপনে পর্যটকদের অবকাঠামোগত সুবিধাও নেই। তাদের অপরিহার্য নিরাপত্তার অভাব প্রবল আছে। নেই পর্যাপ্ত গণ-শৌচাগার। প্রচণ্ড রোদ, প্রবল বৃষ্টি, ঝড়ে যেখানে-সেখানে বেড়ানো পর্যটক, সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর জীবন এবং সুরক্ষার জন্য কোথাও একটি ছাউনি নেই। তাতে সবার অসুখ হচ্ছে, জীবন সংশয় ঘটছে। তারপরও আপনি আসুন। না হলে বাংলাদেশের আয় হবে কীভাবে? না এলে পারকি সাগর উপকূল বাঁচবে কেমন করে? তাই বলি পথ–চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক বা পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী ইংরেজিতে পিএবি সড়ক ধরে পারকিতে যেতে চাতরী-চৌমুহনী বাজার। এরপর এই সৈকতে পৌঁছার আগে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সারকারখানা। তবে এই সড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার অবস্থা বেহাল, জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয়দের প্রতিবার দাবির পর সরকারের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আশ্বাস, ওয়াদা মিলেছে। তবে কথা অনেক হলেও সড়কের সংস্কার হয়নি। বাড়েনি পথ, খানাখন্দই বুজেনি। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হলো_ পারকি সাগর সৈকত ও আশপাশে আইনশৃঙ্খলাই নেই। নিরাপত্তার অভাব তাই প্রকট। বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটক; নারী-শিশুদের সন্ধ্যা অবধি কী সন্ধ্যার পরও পারকিতে বেড়ানো এখনো খুব অ-নিরাপদ। পারকিতে প্রকাশ্যে ও আড়ালে হরেক অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। মারণ মাদক বেচা ও কেনা চলে অবাধে। নারী পর্যটকদের বখাটে, মাস্তানরা প্রায়ই কটূক্তি করে। রাতে পারকিতে থাকার পরিবেশ নেই। মাঝেসাঝে পুলিশি টহল পর্যটকদের চোখে পড়ে। তবে দুর্ধর্ষ মাস্তান ও মাদক ব্যবসায়ীরা সবকিছুই ‘ম্যানেজ’ করে তাবৎ অপরাধ কর্ম চালাচ্ছে। আগে আরও খারাপ অবস্থা ছিল; সৈকত হওয়ায় পারকির বাঁচার আশা বেড়েছে। কারণ মানুষ আসছেন। আগে এই অসাধারণ জায়গাটি চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য ছিল। পারকি বাঁচাতে চান আনোয়ারা ও পুরো দেশের মানুষ। সৈকত ও আশপাশে পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নজরদারি ও টহল নিশ্চিত করতে হবে আকুল দাবি তাদের। তাহলে পারকি আরেক ‘কক্সবাজার’–জনাকীর্ণ পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রভূমি হবে। যথেষ্ট হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট হলে দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা রাতযাপন করে অপরূপ সাগর ও সৈকত উপভোগ করবেন। এখন যেগুলো আছে সবই নিম্নমানের। ভালো খাবারই মেলে না। গলাকাটা দাম আদায় করে। পুরো অবস্থা বদলাতে কোটি কোটি টাকার পুঁজি বিনিয়োগ দরকার। পর্যটকদের আবাসন করতে হবে। সরকার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করলে অনেক ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা এই সৈকতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। এত অসুবিধায় এরই মধ্যে সৈকতের ২০ কিলোমিটারের সেই বনের বেশিরভাগ উধাও করা হয়েছে। স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বন কেটে সাবাড় করেছে। বন বিভাগ নির্বিকার। ঝাউবীথির অনেক গাছ মরে গিয়েছে। অথচ ঝাউসহ নিবিড় নববাগান হতে পারে পারকির অন্যতম আকর্ষণ, কিন্তু বনবাগান গড়ে তোলার কথা যাদের; আগের অভিজ্ঞতাও আছে। সেই বন বিভাগ আশ্বাস দেওয়ার মধ্যেই আছে। বাগান সাবাড় হতে থাকায় পাখ-পাখালি; অতিথি পাখির আনাগোনা খুব কমে গিয়েছে। পুরো অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছে–সৈকত ঘিরে অফুরান ও উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে; কিন্তু পর্যটক, পরিবেশই নেই। বাণিজ্যিক রাজধানীর সৈকত মরে যাচ্ছে। পারকিতে বেড়াতে সময়, টাকা বাঁচে। দিনে গিয়ে দিনে ফেরা যায়। কিন্তু কে চান পরিবার-পরিজন নিয়ে বিব্রত হতে? সেই এলাকাগুলোর অভাবী মানুষও নাচার। যেখানে-সেখানে অবৈধ দোকান গড়েছেন তারা। পারকি সৈকতের বিস্তীর্ণ এলাকায় অপরিকল্পিত শ’খানেকের বেশি দোকান আছে। ফলে ছোট হয়ে গিয়েছে সৈকত। স্থানীয় এই দোকানদাররা পর্যটকদের কাছ থেকে খাবার ও পণ্যের মূল্য বেশি আদায় করছেন। এই বিবাদ নিত্যদিনের। অপরিকল্পনার আরেক নজির– সাগরের জোয়ারের লোনা পানিতে সৈকতের ঝাউগাছের গোড়া থেকে মাটি সরে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছে শত শত ঝাউ। মরা গাছ নিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। দিন দিন কমছে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ঝাউবন। বন কর্তারা দেখেও দেখেন না।
২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের ৫শ ফিটের বেশি লম্বা, ১০ হাজার টন ওজনের জাহাজ ‘এমভি ক্রিস্টাল গোল্ড’ আনোয়ারার পারকি সৈকতে আটকা পড়েছিল। জাহাজটির নিচের অংশ চরে ডুবে গেল। দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করেও সাগরে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হলেন মালিক। সাগরে জাহাজের বাজে তেল পড়ে মাছ মরল, গাছ পচল, পরিবেশ ধ্বংস হলো। দুই বছর ধরে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে এই জাহাজ পারকি সৈকতে। আটকে থেকে বদলে দিচ্ছে সাগরের গতি, প্রকৃতি।

‘বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন’ পারকি সাগর সৈকত আধুনিক সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়তে তিন বছর মেয়াদি ‘পারকি সৈকতে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন ২০১৭ সালের জুলাইয়ে। আগামী বছরের জুনে তাদের কাজের মেয়াদ শেষ হবে। পুরো প্রকল্পে একটি আধুনিক পর্যটন কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। ১৪টি বিরাট ও আধুনিক কটেজ, দুটি পিকনিক শেড, দুটি কিডস কর্নার, একটি করে আধুনিক রেস্তোরাঁ, কনভেনশন হল, চেঞ্জিং ক্লসেট ও ওয়েটিং রুম, কার পার্কিং জোন থাকছে। কমপ্লেক্স তৈরির নির্দিষ্ট ১৩.২৬ একর জমি চারদিকে সীমানা প্রাচীর গড়েছে পর্যটন কর্পোরেশন। এখন প্রকল্প এলাকার উঁচু-নিচু জায়গা সমানের জন্য মাটি ভরাট চলছে। কদিন আগে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির সরকার এই সৈকত দেখে যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে অনুসারে নকশা ও বাস্তবায়ন কাজ চলমান। এরপর আধুনিক অবকাঠামো গড়া শুরু করা হবে, বলেছেন কর্মকর্তারা। তাহলে তারা এতদিন করলেন কী? সেই খবর কেউ রেখেছেন? মোট ৬২ কোটি টাকা খরচ করে আধুনিক এই পর্যটন কমপ্লেক্স তৈরি হলে পারকি হবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টানেল তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজ ভালোভাবে শেষ করা হলে পারকিতে পর্যটকরা আরও বিনোদন পাবেন। কারণ কর্ণফুলীর নিচের টানেলের মুখ বের হবে পারকির কাছের সিইউএফএলে। ফলে পারকিতে পৌঁছাতে পর্যটকদের কোনো ভোগান্তিই পোহাতে হবে না। চট্টগ্রাম শহর থেকে এই সৈকতের দূরত্ব হবে ১০ কী ১৫ মিনিট মাত্র। বঙ্গবন্ধু টানেলের পাশে থাকছে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। নেমেই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা পারকিতে যেতে পারবেন। ফলে পারকি সবদিকে খুব সম্ভাবনাময়। পারকি সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ জানালেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সরকার একটি আধুনিক সাগর সৈকত বিশ্বকে উপহার দেবেন।’ চট্টগ্রাম জেলা সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও বারশত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্‌ বললেন, ‘নানা দিক থেকে পারকি বাংলাদেশের অনন্য, সুন্দর বিনোদন কেন্দ্র। সরকারের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হলে এ হবে দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র। পাল্টে যাবে আনোয়ারা।’ ট্যুরিস্ট পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ জানালেন, ‘পারকি সাগর সৈকতে শুক্র ও শনিবার আমাদের টুরিস্ট পুলিশের মোবাইল দল ডিউটি পালন করেন। দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দুটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তা দিই। পুরোদমে আমরা সৈকতের নিরাপত্তায় কাজ করি। খুব তাড়াতাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি হবে। এক ইন্সপেক্টর এর মধ্যে পারকি ফাঁড়ির দায়িত্ব নিয়েছেন। ফাঁড়ি ভবন ও পুলিশ দল এলে পর্যটকদের স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877