স্বদেশ ডেস্ক: দিনাজপুরে কবর থেকে মানবদেহের কংকাল চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সদর উপজেলার পল্লীর দুটি কবরস্থান থেকে গত এক মাসে প্রায় অর্ধশত কংকাল চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী ও স্বজনদের মধ্যে শুরু হয়েছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ জানিয়েছে, কংকাল চুরির সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর গ্রামের একমাত্র কবরস্থানে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মৃত মানুষকে দাফন করা হয়। এ কবরস্থানেই গত ৬ মাস আগে দাফন করা হয় পার্শ্ববর্তী দরবারপুর গ্রামের মৃত সোহরাব আলীকে। কিন্তু মঙ্গলবার কবরস্থানে তার পরিবারের লোকজন গিয়ে দেখেন কবর খোঁড়া। কবরে নেই কোনো লাশ।
শুধু সোহরাব আলীর কবরের এ অবস্থা নয়, একই গ্রামের নাজমুল ইসলাম মারা যান গত চার মাস আগে। তার কবরে গিয়ে দেখা যায় একই অবস্থা। কবর আছে, কিন্তু লাশের কোনো চিহ্ন নেই।
উত্তর শিবপুর গ্রামের মো. হোসেন আলী জানান, গত এক মাসে এ কবরস্থান থেকে মোট ২২টি কবরের কংকাল উধাও হয়ে গেছে।
একই এলাকার মো. আলিম জানান, বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে কবরস্থান পরিদর্শন করে গেছে।
এলাকাবাসী জানান, ১৩ দশমিক ৫ একর আয়তনের এ কবরস্থানে কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। করবস্থানে আলোর জন্য সরকারিভাবে দুটি সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। বৃহৎ এ কবরস্থানে দুটি সোলার প্যানেল যথেষ্ট নয়। তাই সোলার প্যানেলের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এদিকে একই উপজেলার সদরপুর গ্রামে কবরস্থান থেকেও গত এক মাসে ২০ থেকে ২২টি কংকাল চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সদরপুর গ্রামের সোলেমান আলী জানান, গত এক বছর ১০ মাস আগে মারা যান তার স্ত্রী খায়রুন নেছা। তিন দিন আগে তিনি কবরস্থানে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রীর খবরটি খোঁড়া। কাছে গিয়ে দেখেন কবরে কোনো হাড়গোর নেই।
তিনি জানান, শুধু তার স্ত্রীর কবরেরই এ অবস্থা নয়, একে একে ২০-২২টি কবরের একই অবস্থা।
এ বিষয়ে দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কবরস্থান পরিদর্শন করেছে এবং কবর থেকে কংকাল চুরির সত্যতা মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে কংকাল চোর চক্রকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে এবং স্থানীয়ভাবে এর সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।