অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩০৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে পাকিস্তান। কিন্তু হঠাৎ ধস নামে ব্যাটিং লাইনআপে। অজি বোলিং তোপে ছন্দ হারান হাফিজ-মালিকরা। দুই উইকেটে ১৩৬ থেকে ২০০ রানে পৌঁছাতেই হারিয়ে ফেলে আরও পাঁচটি উইকেট!
এরপরে আবার ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। অধিনায়ক সরফরাজকে সঙ্গে নিয়ে দুই বোলার ম্যাচের শেষ দৃশ্যপটে কিছুটা নাটকীয়তার জন্ম দেন। হাসান আলীর পর ওহাব রিয়াজ ঝড় তুলে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন অজিদের মনে। কিন্তু না, বোলারদের কাঁধে ভর করে বেশিদূর এগোতে পারেনি পাকিস্তান।
ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো এই ম্যাচে ২৬ বল বাকি থাকতেই ২৬৬ রানে থেমে যায় সরফরাজদের ইনিংস। ৪১ রানের পরাজয় মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে দলটি।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেছিলেন ইমাম-উল-হক। বাবর আজম ৩০, মোহাম্মদ হাফিজ ৪৬ ও সরফরাজ ৪৫ রান করেন। শেষ পর্যন্ত লড়েছিলেন সরফরাজ। কিন্তু নির্ভরযোগ্য কোনো ব্যাটসম্যানের সঙ্গ না পাওয়ায় পারেননি দলকে জেতাতে। হাসান আলী ৩২ ও ওহাব রিয়াজ ৪৫ রান নিয়ে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন পাক অধিনায়কের মনে, কিন্তু তারাও বেশিদূর এগোতে পারেননি।
অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন প্যাট কমিন্স। দুটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক ও রিচার্ডসন।
টনটনের কাউন্টি গ্রাউন্ডে মোহাম্মদ আমিরের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভালো শুরুর পরও রানের পাহাড় গড়তে পারেনি চ্যাম্পিয়নরা। ৩০ ওভারের আগেই ২০০ রান তুলে ফেলা অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত থামে ৩০৭ রানে।
নির্বাসন থেকে ফিরে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। এই বাঁহাতি ওপেনার ৯৮ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান, তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরির ওপর পাকিস্তানকে এ লক্ষ্য দিতে পারে অজিরা।
একটা ছোট পরিসংখ্যানেই বোঝা যায়, অস্ট্রেলিয়ার শেষটা কেমন বাজে ছিল। ৩৪ ওভার চলাকালীন অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল দুই উইকেটে ২২৩। হাতে আটটি উইকেট ও ১৬ ওভার থাকায় সাড়ে ৩০০ রান হবে-এমন সম্ভাবনাই ছিল। কিন্তু পাক বোলাররা তা হতে দেননি। ৪৯ ওভার শেষে বাকি আটটি উইকেট হারায় চ্যাম্পিয়নরা। ২২৩ থেকে ৩০৭ রানের মধ্যে স্মিথরা হারিয়ে ফেলেন সবকটি উইকেট।
দুই ওপেনার ছাড়া এই ম্যাচে অজিদের হয়ে কেউ সুবিধা করতে পারেনি। ওয়ার্নার সেঞ্চুরি করলেও মাত্র ১৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেন অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি ৮২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এই দুজন ছাড়া ব্যর্থ ছিলেন ম্যাক্সওয়েল-মার্শরা। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রানে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির। ১০ ওভারে মাত্র ৩৭ রান দিয়ে তিনি অজিদের গুঁড়িয়ে দেন। এছাড়া দুইটি উইকেট নেন শাহেন শাহ আফ্রিদী। একটি করে উইকেট নেন হাসান আলী, ওহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ হাফিজ।