রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের মামলা নিয়েছে থানা

অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের মামলা নিয়েছে থানা

শেরপুরের নকলায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ডলি খানমকে (২২) গাছে বেঁধে নির্যাতন, গর্ভপাত ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় অবশেষে মামলা নিয়েছে থানাপুলিশ। এর আগে বর্বরোচিত ওই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে সব মহলে তোলপাড় শুরু হয়। টনক নড়ে পুলিশের।

মঙ্গলবার রাতে নির্যাতিতা গৃহবধূকে বাদী করে নকলা থানায় ওই মামলা রেকর্ড হয়। মামলায় নির্যাতিতা গৃহবধূর ভাসুর আবু সালেহ, নেছারউদ্দিন ও সলিমুল্লাহ, জা লাকী আক্তার, জার বড় বোন নাসিমা আক্তার, পৌর কাউন্সিলর রূপালী বেগম, তার স্বামী আমিরুল ইসলাম, প্রতিবেশী তাফাজ্জল হোসেন, তার ছেলে ইসমাইল হোসেনসহ ৯ জনকে এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে গতকাল বুধবার সকালে নাসিমা আক্তার নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি নকলা উপজেলার ভুরদি গ্রামের আবদুল মোতালেবের মেয়ে এবং ভিকটিম ডলি খানমের জা লাকী আক্তারের বড় বোন। এদিকে গতকাল বুধবার সকালে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলাম ও নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বিষয়টি শেরপুরে ‘টক অব দি টাউন’ হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, নকলা পৌর শহরের কায়দা গ্রামে কৃষক শফিউল্লাহর স্ত্রী ও স্থানীয় চন্দ্রকোনা কলেজের ডিগ্রি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডলি খানম। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১০ মে সকালে শফিউল্লাহর বড় ভাই সেনাসদস্য নেছারউদ্দিন ও পৌর কাউন্সিলর রূপালী বেগমের ইন্ধনে আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে ইউক্যালিপটাস গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে।

পরে তারা ডলির গোপনাঙ্গসহ পেট, বুক ও পিঠে উপর্যুপরি কিল ঘুষি ও লাথির আঘাতে তাকে নিস্তেজ করে ফেলে। এ সময় ওই নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করেন লাকী আক্তার। নির্যাতনে ডলি খানমের অকাল গর্ভপাত হয়ে যায় এবং তিনি টানা ১৪ দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। ওই ঘটনায় গত ৩ জুন ডলি খানমের স্বামী শফিউল্লাহ বাদী হয়ে আবু সালেহসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করে আদালতে একটি নালিশি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি জামালপুরের পিবিআইয়ে তদন্তাধীন থাকাবস্থায় সোমবার রাতে গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ফাঁস হয়ে পড়লে এলাকায় শুরু হয় তোলপাড়। ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে সরেজমিন পরিদর্শনসহ থানায় ছুটে যান জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান, গাছে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার ঘটনাটি পুলিশের নজরে আসে।

ওই ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই মামলায় ইতোমধ্যে নাসিমা আক্তার নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। তবে আসামিদের মধ্যে একজন সেনাসদস্য থাকায় তার বিষয়ে ‘অফিসিয়াল প্রসেস’ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877