বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
লিভার সিরোসিস রোগিদের খাদ্যাবাস

লিভার সিরোসিস রোগিদের খাদ্যাবাস

লিভার সিরোসিস রোগিদের খাদ্যাবা
ডা. মামুন আল মাহতাব
সিরোসিস হচ্ছে এমন একটি রোগ যেখানে লিভারের স্বাভাবিক গঠন এবং একটা পর্যায়ে কার্য ক্ষমতা নষ্ট হযে যায়। লিভার সিরোসিসের অনেক কপ্লিকেশনের অন্যতম হচ্ছে এ্যাসাইটিস বা পেটে পানি আসা। এ সব তরল এবং লবণ মেপে খাওয়াটা জরুরী। তরকারিতে যতটুকু লবণ দেয়া হয়, তার বেশি লবণ এ ধরনের রোগীদের খাওয়া উচিত নয়। অনেকের ধারণা লবণ ভেজে খেলে সমস্যা নেই। এই ধারণাটা মোটেও ঠিক না, কারণ সমস্যাটা আসলে লবণে না- বরং সোডিয়ামে। এই সোডিয়াম আমরা মূলত দুভাবে খেয়ে থাকি। একটি হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড বা খাওয়ার লবণ, আর অন্যটি সোডিয়াম বাইকার্বোনেট বা বেকিং পাউডার। সেজন্যই এসইটিসের রোগীদের বেকারি আইটেম যেমন বিস্কুট, কেক ইত্যাদি এবং ফিজি ড্রিক্স যেমন কোক, পেপসি ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত। এ্যাসাইটিসের রোগীরা যদি বেশি বেশি তরল পান করেন বা সোডিয়ামযুক্ত খাবার খান, তাহলে তাদের পেটের পানি বাড়বে বৈ কমবে না।
লিভার সিরোসিসের আরেকটি মারাত্মক কমপ্লিকেশন হলে হেপাটিক এ্যানসেফালোপ্যাথি বা হেপাটিক কোমা। সহজ কথায় বলতে গেলে হয়ে যাওয়া। প্রাণীজ আমিষ যেমন মাছ-মাংস, ডিম-দুধ ইত্যাদি খুব বেশি পরিমাণে খেলে রক্তে এ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে রোগীর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ডিকস্পেনসেটেড বা এ্যাডভান্সড লিভার সিরোসিসের রোগীদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তবে প্লান্ট প্রোটিন যেমন ডাল এ ধরনের রোগীদের জন্য নিরাপদ। তাই বলে অতিরিক্ত সতর্ক হতে গিয়ে প্রাণীজ আমিষ একেবারেই বাদ দিলে চলবে না। সেক্ষেত্রে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে কিডনি ফেউলিওর হতে পারে। বিশেষ করে যেহেতু এ ধরনের রোগীদের কিডনি এমনিতেই নাজুক অবস্থায় থাকে এবং তারা হেপাটোরেনাল সিনড্রোম নামক মারাত্মক ধরনের কিডনি ফেউলিওয়ের ঝুঁকিতে থাকেন।
পাশাপাশি লিভার সিরোসিসের রোগীদের বাইরের খাবার এবং ফুটানো পানি খাবার ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। কারণ তাদের লিভারে যদি হেপাটাইটিস এ বা ই ভাইরাসের মতো পানি ও খাদ্যবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ হয় তবে তাদের খুব সহজেই একিউট অন ক্রনিক লিভার মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
লিভার সিরোসিস এবং আরও সহজভাবে বলতে গেলে লিভারে যে কোন রোগীরই এ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এ্যালকোহল নিজেই এ্যালকোহলিক লিভার সিরোসিস করতে পারে। পাশাপাশি যারা এ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের লিভার এ্যাবাসেস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি| গবেষণায় এও দেখা গেছে যে এ্যালকোহল গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসজনিত লিভার মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পায়।
শেষ কথা : লিভারের বিভিন্ন রোগের খাবারের ব্যাপারে বিভিন্ন রকম বাছ-বিচার আর সতর্কতা এসব রোগীর ভাল থাকতে যেমন অনেকটা সাহায্য করে তেমনি অজ্ঞতা বা ভুল ধারণার কারণে অনেক সময়েই লিভারের রোগীরা বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। এ ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান খুবই জরুরী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877