স্বদেশ ডেস্ক: দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া দেখে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিবে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার জামিন না হলে বিএনপির কী কর্মসূচি হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখি না আগামীকাল কী হয়?
তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া দেখে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যখন গণতন্ত্রের জায়গা বন্ধ হয়ে যায় তখন রাজপথেই তার সমাধান করতে হবে। তবে সারা জাতি আগামীকাল দেশনেত্রীর জামিনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছে।
আজ বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডাঃ মোঃ আবদুস সেলিম, ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ডাঃ সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সেক্রেটারি ডাঃ মাসুম বিল্লাহ, ডাঃ গালিব প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে ৬৬৫ দিন হলো অবৈধ ক্ষমতার জোরে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আইন-আদালত, ন্যায় বিচার , সংবিধান, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বয়স, অসুস্থতাসহ সকল বিবেচনায় চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়া আইনগত অধিকার। দেশ-বিদেশের আইনজ্ঞরা বলছেন, এই মামলায় জামিন না পাওয়া বিস্ময়কর। তিনি নিশ্চিতভাবেই জামিনের হকদার। গোটা বাংলাদেশের মানুষ অব্যহতভাবে দাবি জানাচ্ছে তার জামিনের। অথচ স্বাভাবিক এই জামিন নিয়ে কত রকমের টালবাহানা করা হচ্ছে! দেশনেত্রীকে জেলে রেখে হত্যার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি করবেন। আগামীকালের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার সবশেষ প্রতিবেদন দিতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৭৫ বছর বয়সী দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা এত ভয়ঙ্কর যে এই মুহূর্তে তাকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে জীবনহানির চরম ঝুঁকি রয়েছে। সুচিকিৎসার অভাবে তার যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটা আর ফিরে আসবে না। তার বাম হাত ও শরীরের বাম দিক প্রায় প্যারালাইজড হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারো সাহায্য ছাড়া তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। তার এই গুরুতর অসুস্থতায় দেশবাসী শুধু উদ্বিগ্নই নয়, বরং দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দিয়ে ও চিকিৎসা না দিয়ে তাকে গুরুতর শারীরিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য এটি যে সরকারের অশুভ পরিকল্পনারই অংশ তা জনগণ বিশ্বাস করে।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকারের অশুভ ষড়যন্ত্রের আরেকটি জলজ্যান্ত প্রমাণ হলো গত ২৫ দিন ধরে তার সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হচ্ছে না। এটি জেলকোডের চরম লঙ্ঘন। এটির মাধ্যমে বিধি-বিধানকে উপেক্ষা করে প্রতিহিংসার বিধানকেই চরিতার্থ করা হচ্ছে। গত ১৩ নভেম্বরের পর থেকে আর সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। আমরা বর্তমানে তার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে চরম আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে উচ্চ আদালত থেকে দেশনেত্রী ন্যায়বিচার পাবেন। বেগম খালেদা জিয়া দেশের সিনিয়র সিটিজেন, চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা ও দেশের জনপ্রিয় শীর্ষ রাজনীতিবিদ এবং গুরুতর অসুস্থ, তাই তার জামিন পাওয়া ন্যায়সঙ্গত অধিকার। ইতোপূর্বে এধরণের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে অনেকেই জামিন পেয়েছেন, সেটির অসংখ্য নজিরও রয়েছে।