বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। বিশ্বকাপ শুরুর আগে দুবাইয়ে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে এসে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে একটা ভালো প্রস্তুতির আশা করলেও মূলত টানা ১১ ওয়ানডেতে হেরেছিলো পাকিস্তান। নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযানের প্রথম ম্যাচের ফলাফলও হতাশাজনক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিলো পাকিস্তান।
তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে- দলটির নাম পাকিস্তান। যেকোন সময়, যেকোন পরিস্থিততি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ও সক্ষমতা দেশটির রয়েছে। আর তাই বিশ্বব্যাপী ক্রিকেট ভক্ত ও বোদ্ধাদের কাছে পাকিস্তান পরিচিত ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ হিসেবে।
যার কারণে বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই বেশ ভালোভাবেই টুর্নামেন্টে ফিরে এসেছে তারা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট ইংল্যান্ডকে ১৪ রানে হারিয়ে দেয় পাকিস্তান। আর তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সহজ জয় নিয়ে আরো দুটো পয়েন্ট নিজেদের করে নিতে চেয়েছিল সরফরাজ-বাবর আজমরা। কিন্তু ১৯৯২ বিশ্বকাপের চ্যম্পিয়নদের দুর্ভাগ্য। তারা মাঠেই নামতে পারেনি। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে ম্যাচটি। ফলাফল তুলনামূলক দুর্বল দল শ্রীলঙ্কার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি।
তবে বুধবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। এই ম্যাচকে সামনে রেখে বার্তা সংস্থা এএফপির সাথে কথা বলেছেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম ভরসা ও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ। তার মতে, পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও চলমান আসরের অন্যতম ফেবারিট অস্ট্রেলিয়াকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই পাকিস্তানের।
মোহাম্মদ হাফিজ বলেন,‘আমার মনে হয় বিশ্বকাপের দশটি দলের সবাইকেই হারানো সম্ভব। আপনি যদি ইংল্যান্ডর দিকে তাকান, তারা খুব ভালো ক্রিকেট খেলছিলো এবং সবাই মনে করেছিলো তাদের হারানো কঠিন হবে। কিন্তু সবাইকেই হারানো সম্ভব। আমাদের পরের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াও খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। তাদেরও হারানো সম্ভব।’
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সাথে পাকিস্তানের রেকর্ড খুব বেশি ভালো নয়। অজিদের সাথে বিশ্বকাপের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে চারবারই পরাজয়বরণ করে মাঠ ছেড়েছে পাকিস্তান। তাছাড়া চলতি বছরই বিশ্বকাপের আগে দুবাইয়ে অজিদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তারা। তবে অতীতের এই সব পরিসংখ্যান নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন হাফিজ। তার কাছে প্রতিটি দিনই নতুন একটা দিন।
হাফিজ বলেন,‘হ্যাঁ, আমাদের হয়ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব ভালো রেকর্ড নেই। কারণ তারা খুব ভালো খেলছে, কিন্তু প্রতিটি দিনই একটা নতুন দিন। এটা বিশ্বকাপ এবং আমাদের দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতে দারুণ একটা মোমেন্টাম পেয়েছে। হয়ত আমরা টানা হেরেছি কিন্তু খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় থেকে কিছু ভালো দিকও খুঁজে পেয়েছেন তিনি। হাফিজ আরো বলেন,‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে ম্যাচে আমরা জয় পেয়েছি সেই ম্যাচের সবচেয়ে ভালো দিক হলো সবাই কন্ট্রিবিউট করেছে। এমনকি হাসান আলি, যে কোনো উইকেট পায়নি। কিন্তু তার শেষ তিন ওভার খুবই ভালো ছিলো।’
ভালো হলেই ভালো। নিজেদের দিনে পাকিস্তান যে কাউকেই ছাড় দেয় না, তা বোধ হয় ক্রিকেট ভক্তদের নতুন করে খুলে বলার দরকার নেই। এখন কেবল বুধবার মাঠে নামার অপেক্ষা।