সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

ইনিংস ও ১৩০ রানে হারলো বাংলাদেশ

ইনিংস ও ১৩০ রানে হারলো বাংলাদেশ

(L-R) India's Ajinkya Rahane, captain Virat Kohli, Rohit Sharma and Cheteshwar Pujara appeal against Bangladesh's Mushfiqur Rahim during the third day of the first Test cricket match of a two-match series between India and Bangladesh at Holkar Cricket Stadium in Indore on November 16, 2019. (Photo by Indranil MUKHERJEE / AFP) / ----IMAGE RESTRICTED TO EDITORIAL USE - STRICTLY NO COMMERCIAL USE----- / GETTYOUT

স্পোর্টস ডেস্ক:

নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শনিবার ২১৩ রানেই অলআউট বাংলাদেশ। এতে ইনিংস ও ১৩০ রানের ব্যবধানে হার মেনে নিতে হলো মুশফিক–মুমিনুলদের। টাইগার ভক্তরা হয়তো ভেবে ছিলেন, প্রথম ইনিংসের ১৫০ রানের স্কোরটাকে অঘটন প্রমান করতে হলেও দ্বিতীয় ইনিংসটা দেখেশুনে খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু মঞ্চস্থ হলো সেই পুরনো ইনিংসই।  ভারত শেখাল কিভাবে খেলতে হয় টেস্ট ক্রিকেট। কিন্তু বাংলাদেশ দল আর টিম ম্যানেজম্যান্ট শিখল কীনা সেই প্রশ্ন তোলা থাকল সময়ের হাতে।

এই জয় দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল ভারত। ২২ নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শুরু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। যেখানে গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির ম্যাচে লড়বে দুই দল।

তার আগে দুঃস্বপ্ন সঙ্গী করেই ইন্দোর ছাড়বে মুমিনুল হকের দল। অনুপ্রানিত হওয়ার মতো কিছুই যে হলকারের এই মাঠ থেকে মিলল না। ম্যাচে সম্ভবত একটাই প্রাপ্তি টস জয়। অবশ্য পেস বোলার আবু জায়েদ রাহির ৪ উইকেট শিকার এটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছে দুই পেসার নিয়ে খেলার সনাতনী ভাবনা থেকেও এবার বেরিয়ে আসতে হবে।

শনিবার টেস্টের তৃতীয় দিনে ছিল ইনিংস হার বাঁচানোর লড়াই। একইসাথে প্রথম ইনিংসে দেড়শ রানে অলআউট যে ছিল নিছকই অঘটন সেটা বুঝিয়ে দেয়ার মঞ্চও। কিন্তু কোথায় কি? ফের একই গল্প। ভারতীয় পেস তোপে সকালেই এলোমেলো লাইন আপ!

অবশ্য শুধুই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের এক তরফা দোষ দিয়ে লাভ নেই। ভারতীয় পেসাররা আগের মতোই ছিলেন ছিল দুর্দান্ত। ইন্দোরের উইকেটে তার সুইং আর বাউন্সারে ফুটে উঠেছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের দৈনতার চিত্র। স্কিলের ঘাটতিও যে চোখে পড়ার মতো!

সকালে শিশির ভেজা উইকেটের কথা মাথায় রেখে আর নামেন নি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বিরাট কোহলি। ইন্দোর ১ম ইনিংসে ভারত ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেট ৪৯৩ রানে। ৩৪৩ রানে পিছিয়ে থেকে এখন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে অতিথিরা।

ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামের শিশির ভেজা সকালের উইকেটে দারুণ ছন্দে ছিলেন ভারতীয় পেসাররা। সকালের প্রথম এক ঘন্টা না যেতেই বিদায় নেন দুই ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ভারত পেয়ে যায় তাদের প্রথম উইকেট। উমেশ যাদবের সুইংয়ে কাবু ইমরুল। জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করার মাশুল তো গুনতেই হয়। লেগ স্টাম্প উড়ে যায় এই ওপেনারের। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও দলে ফেরা এই ব্যাটসম্যান তুললেন মাত্র ৬ রান। খেলেন ১৩ বল।

তারপর আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন ইশান্ত। তার লেংথ বলে বোকা বনেন সাদমান। উড়ে যায় তার স্ট্যাম্প। বিদায়ের আগে করেন ২৪ বলে ৬।

প্রথম ইনিংসে কিছুটা সময় লড়াই লড়েছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে দলকে বিপর্যয় থেকে দলকে রক্ষা করতে পারলেন না মুমিনুল হক। তার বিপক্ষে রিভিউতে হাসিমুখ ভারতের। মোহাম্মদ শামির অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ বলে শাফল করতে গিয়ে হল না। বল লাগল প্যাডে। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে যদিও সাড়া দেননি আম্পায়ার রড টাকার। তারপর রিভিউতে আউট। হলকার স্টেডিয়ামের গ্যালারি আরও এক গর্জে উঠে। ৭ রানে আউট মুমিনুল।

মুমিনুলের পর মোহাম্মদ মিঠুনও কিছুই করতে পারলেন না। প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের জবাব দিতে হলে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলা চাই। কিন্তু শামির শর্ট বলে মিঠুন চাইলেন পুল করতে চেয়ে ব্যর্থ। ব্যাটের এক পাশে লেগে বল চলে যায় শর্ট মিড উইকেটে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মায়াঙ্ক আগারওয়ালের হাতে। ২৬ বলে ১৮ রান করে আউট মিঠুন।

এমন বিপর্যয়ে হাল ধরেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মনে হচ্ছিল তাদের ব্যাটে বুঝি অন্তত সম্মান বাঁচবে। এরমধ্যে রোহিত শর্মা স্লিপে ক্যাচে ফেলে দিলে প্রাণে বাঁচেন মুশফিক। তখন তার রান ৪। তবে মাহমুদউল্লাহকে আগের ইনিংসের মতোই নড়বড়ে দেখাল। লাঞ্চের পরই তাকে ফেরান শামি। তার সুইং বলটি ছেড়ে দিলেই পারতেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ব্যাট পেতে দিলেন তিনি। সংগতভাবেই কানায় লেগে বল স্লিপে রোহিত শর্মার হাতে। তিনি ফেরেন ৩৫ বলে ১৫ রানে। ৭২ রানেই ৫ উইকেট শেষ বাংলাদেশের।

তারপর অবশ্য কিছুটা সময় লড়লেন লিটন-মুশফিক। এই জুটিতে ভালই এগিয়ে যাচ্ছিল দল। কিন্তু বড্ড বেশি তাড়াহুড়ো ছিল লিটনের। তিনিও উইকেট দিয়ে আসলেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে উড়িয়ে খেলতে গিয়েই ভুল হলো। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে লিটনকে দেখালেন সাজঘরের পথ। ৩৯ বলে ৩৫ করে তুলে ফিরেন তিন। আর ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে তার ৬৩ রানের জুটি।

উইকেট পতনের মিছিলে যা একটু লড়লেন মুশফিকুর রহিম। লিটনের পর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গেও তিনি গড়েন ৫৯ রানের জুটি। এরমধ্যে মিরাজ ফেরেন ৩৮ রান তুলে। আর ১০১ বলে মুশি ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। ভারতের বিপক্ষে বরাবরই সফল তিনি। সব মিলিয়ে ৫ টেস্টে তৃতীয়বার ফিফটি করেন। কিন্তু দলকে বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে পারেন নি। ১৫০ বলে ৬৪ রান করে বরিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার মুশি।

এর আগে ভারতকে রান পাহাড়ে নিয়ে যান মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তিনি তুলে নেন তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। এরমধ্যে তিনটি শতক পেয়েছে তার সবশেষ ৫ ইনিংসে! মেহেদি মিরাজকে ছক্কা হাঁকিয়ে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। ৩২ রানে প্রাণ পেয়ে সুযোগটা কাজে লাগালেন তিনি। ফেলেন ২৪৩ রানে। ৩৩০ বলের ইনিংসে ছিল ২৮ চার ও ৮ ছক্কা।

মায়াঙ্কের ডাবল সেঞ্চুরি আর ইশান্ত, যাদব আর শামিমের আগুণ ঝরা বোলিংয়েই পুড়ল বাংলাদেশ। শামি ২য় ইনিংসে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যাদব ২টি ও অশ্বিন নিয়েছেন ৩ উইকেট।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877