ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসার দিন দিন বেড়েই চলেছে। অথচ একটু সচেতন হলেই এ রোগ প্রাথমিক পর্যায়েই নির্মূল করা যায়। শুনলে অবাক হতেই হয়, প্রতিবছর অসংখ্য নারীর মৃত্যু হচ্ছে এ রোগে। আসুন, জেনে নিই কিভাবে এ রোগ নিজেই ধরা সম্ভব এবং কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
আপনি যদি গর্ভবতী না হন বা সন্তানকে দুগ্ধপান না করান, যদি আপনার নিপল বা স্তনবৃন্ত থেকে কোনো ধরনের রস জাতীয় পদার্থ বা অন্য কোনো তরল পদার্থ বের হয়, যদি রক্ত বের হয়, তবে এটি মোটেও হেলাফেলা করার মতো বিষয় নয়। এমন হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। নারীর স্তনবৃন্তের চারপাশের চামড়া এমনিতেই নরম ও মসৃণ থাকার কথা। কিন্তু স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তা মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে চামড়া উঠেও যায়। পাল্টে যেতে পারে স্তনবৃন্তের রঙ।
এ ছাড়া পুরো স্তন যদি ফুলে যায় বা স্তনের একাংশ যদি ফুলে যায়, তা হলে অবশ্যই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মাঝে মধ্যে যদি স্তনে ব্যথা করে বা হঠাৎ করেই স্তন নরম বা টেন্ডার হয়ে ওঠে, তা হলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে। আসলে স্তন ক্যানসারের ফলে স্তনের টিস্যুর মধ্যে বদল ঘটে এ ধরনের ব্যথা হতে পারে। এমনিতে স্তনবৃন্ত বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকে। তাতে কোনো ধরনের ব্যথা, যন্ত্রণা বা ইরিটেশন হয় না। হঠাৎ করে যদি স্তনবৃন্তে কোনো ধরনের ইরিটেশন অনুভব করেন বা স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যায়, তা হলে তা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
স্তনে কোনো ধরনের লাম্প বা মাংসপিণ্ড গজালে সময় নষ্ট না করে ক্যানসার রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। এ লাম্পে ব্যথা হতে পারে বা নাও হতে পারে। মাঝে মধ্যে আয়নার সামনে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে হাত ওপরের দিকে তুলে অন্য হাত দিয়ে ভালো করে স্তনের ওপর হাত বুলিয়ে দেখুন কোনো ধরনের লাম্প বা মাংসপিণ্ড গজিয়েছে কিনা। শুধু স্তন নয়, বগলেও যদি কোনো ধরনের লাম্প বা মাংসপিণ্ড গজায়, তা হলেও তা স্তন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হঠাৎ করে যদি আপনার স্তনের আকার ও আকৃতিতে পরিবর্তন ঘটে, তাও হতে পারে স্তন ক্যানসারের লক্ষণ। অতএব খেয়াল রাখুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।
লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শের-ই-বাংলানগর, ঢাকা চেম্বার : আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা। ০১৬৪৪৪৩৩৪৯৮, ০১৭৩২৪২৯৩৯০