স্বদেশ ডেস্ক:
ইমপিচমেন্ট শুনানির প্রথম দিনেই ট্রাম্পের আচরণ সম্পর্কে মুখ খুললেন দুই উচ্চপদস্থ মার্কিন কূটনীতিক। তবে ডেমোক্র্যাট ও রিপাব্লিকানরা নিজস্ব অবস্থানে অটল রয়েছেন। ট্রাম্পও গোটা প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করে দিচ্ছেন। বুধবার থেকে শুরু হলো ইমপিচমেন্ট তদন্তের প্রকাশ্য শুনানি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগত স্বার্থে ইউক্রেনের উপর কতটা চাপ সৃষ্টি করেছিলেন এবং সেই আচরণ সংবিধানসম্মত ছিল কিনা, সে বিষয়ে সাক্ষীরা সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের জবাব দেন এবং নিজেদের মূল্যায়ন তুলে ধরেন।
বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল গোটা প্রক্রিয়াটিকে সতর্কভাবে চালনা করার চেষ্টা করছে। তাদের মতে, ব্যক্তি হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার বশে নয়, সার্বিকভাবে দেশের সংবিধান ও প্রেসিডেন্টের দপ্তরের মর্যাদা রক্ষা করতেই এমন তদন্ত চালানো হচ্ছে। এভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমারেখা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে তারা মনে করে।
অন্যদিকে তদন্ত কমিটির রিপাব্লিকান দলের সংসদ সদস্যরা গোটা উদ্যোগকে নস্যাৎ করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ জো বাইডেন ও তার পুত্রের কার্যকলাপ সম্পর্কে তদন্ত চালায়নি এবং ট্রাম্প প্রশাসনও সে দেশের জন্য সামরিক সাহায্য আটকে রাখেনি। প্রবল চাপের মুখে ট্রাম্প যে বাধ্য হয়ে সেই কাজ করেছেন, সেই বিষয়টি তারা অবশ্য সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
শুনানির প্রথম দিনে সাক্ষী হিসেবে বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কূটনীতিক ইউক্রেনের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অনৈতিক’ চাপের কড়া সমালোচনা করেন। ইউক্রেনে অস্থায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম টেলর গোটা ঘটনা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। টেলর বলেন, ট্রাম্প সত্যি ইউক্রেনে বাইডেনের কার্যকলাপের তদন্তে প্রবল আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। সে দেশের সরকারকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য চাপ দিতে তাঁর প্রশাসন ৩৯ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের সামরিক সাহায্য আটকে রেখেছিল। টেলরের মতে, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে রুডি জুলিয়ানি সরাসরি ইউক্রেনকে এমন কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। গোটা ঘটনার ফলে রাশিয়ার আগ্রাসী আচরণের মুখে ইউক্রেন অসহায় হয়ে পড়েছে এবং মার্কিন কৌশলগত স্বার্থের ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।
বুধবার সাক্ষীদের বয়ান প্রেসিডেন্টের আচরণের উপর কালো ছায়া ফেললেও ট্রাম্প নিজে সেই সব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, যে কাজের চাপে তিনি টেলিভিশনে শুনানি দেখার সময় পাননি। ট্রাম্প আবার গোটা প্রক্রিয়ার কড়া সমালোচনা করেন।
টেলিভিশনের পর্দায় প্রথম দিনের শুনানি দেখে দুই দলের সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণের চেষ্টা চলছে। দেখা যাচ্ছে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্যোগের পক্ষে রয়েছে। অন্যদিকে রিপাব্লিকান দলের সমর্থকরা এখনো ট্রাম্পকে নির্দোষ মনে করছেন। দুই পক্ষই নিজেদের পছন্দমতো উক্তিগুলি বেছে নিয়ে সেগুলি বিশ্বাস করছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে।