বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন

লাথি মেরে ফেলে দিল হেলপার পিষে মারল চালক

লাথি মেরে ফেলে দিল হেলপার পিষে মারল চালক

ঈদের ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ (৩৫)। বেড়ানো শেষে ফিরছিলেন কর্মস্থল গাজীপুরে। ফেরার পথে ভাড়া নিয়ে বাগবিত-া। এক পর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে লাথি মেরে ফেলে দেয় সহকারী (হেলপার)। পরে তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পিষে হত্যা করেছে চালক।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে রবিবার দুপুরে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায়। নিহত সালাহউদ্দিন আহমেদ (৩৫) ঢাকার আলুবাজারের মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্ত্রী পারুল আক্তারকে নিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকার আতাউর রহমান মেম্বারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় স্কটেক্স অ্যাপারেল কারখানার গাড়িচালক ছিলেন সালাহউদ্দিন।

নিহতের ছোট ভাই জামালউদ্দিন জানান, সকালে ঈদের ছুটি কাটিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ময়মনসিংহের ফুলপুর শ্বশুরবাড়ি থেকে গাজীপুরে কর্মস্থলে ফিরছিলেন সালাহউদ্দিন। পথে ‘আলম এশিয়া’ পরিবহনের একটি বাসে ভাড়া নিয়ে বাকবিত-ার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, পথে বাসের ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে হেলপারের বাগবিত-া হয়। একপর্যায়ে বাসের ভেতরেই তাকে মারধর করে বাসের হেলপার। বাসটি বাঘেরবাজারে পৌঁছলে সালাহউদ্দিনকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয় হেলপার। এ সময় সালাহউদ্দিনকে চাপা দিয়ে চালক দ্রুতগতিতে বাসটি নিয়ে ঢাকার দিকে চলতে থাকেন।

পারুল আরও বলেন, সালাহউদ্দিনকে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার পর আমি নামতে চাইলে হেলপার বাধা দেয়। পরে আমাকে নিয়ে বাসটি চলতে শুরু করে। এ সময় কান্নাকাটি শুরু করলে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া ফু-ওয়াং কারখানার সামনে নিয়ে বাসের গতি কমিয়ে আমাকেও ফেলে দেয়।

মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন বলেন, বাসের ভেতরে ‘ড্রাইভার’ পরিচয় দিয়ে কন্ডাক্টরকে ভাড়া কিছু টাকা কম রাখার জন্য অনুরোধ করেন সালাহউদ্দিন। এ নিয়ে সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রীর সঙ্গে কন্ডাক্টর ও চালকের সহযোগীর বাগবিত-া হয়। এক পর্যায়ে চালকের সহযোগী লাথি মেরে সালাহউদ্দিনকে ফেলে দেবে বলে বাসের ভেতরে হুমকি দেয়। এ সময় সালাউদ্দিন তার ভাই জামালকে মোবাইল ফোনে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াতে বলেন। পরে জামাল আরও ৫-৬ জনকে নিয়ে বাঘের বাজার দাঁড়িয়ে থাকেন।

ওসি আরও বলেন, স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনরা কিছু বোঝে ওঠার আগেই চালকের সহকারী লাথি মেরে সালাহউদ্দিনকে বাস থেকে ফেলে দেয়। কিন্তু তার স্ত্রীকে না নামিয়েই বাস চলে যেতে থাকলে সালাহউদ্দিন সড়ক থেকে উঠে গাড়ির সামনে গিয়ে গতিরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় স্বজনদের সামনে চালক বাসটি সালাহউদ্দিনের ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে জয়দেবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় বাসটি আটক করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও সহকারী পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা যায়নি। নিহতের ভাই জালালউদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আলম এশিয়া পরিবহনের চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ওসি দেলোয়ার হুসেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877