ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে রোববার সকালে পটুয়াখালী ও খুলনায় গাছ পড়ে এক নারীসহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উত্তর রামপুরা গ্রামে ঝড়ো বাতাসের তোড়ে ঘরের উপর গাছ চাপা পড়ে হামেদ ফকির (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন বলে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় সকালে গাছ পরে আলমগীর হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ওসি মল্লিক মোর্শেদ।
এছাড়া, খুলনার দাকোপ উপজেলায় প্রমিলা মণ্ডল (৫২) নামে এক নারী গাছ চাপা পড়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল ওয়াদুদ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার সকালে দেশের চারটি সমূদ্র বন্দরসমূহ থেকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বললেও পটুয়াখালীতে বিপদ সংকেত এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের বের না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার কাউন্সিলর শাহআলম হাওলাদার জানান, সাগর ও নদী ঘেঁষা বাঁধের বাইরের বসতিদের বেশকিছু কাঁচা ঘর ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে।
ইউএনবির পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, কুয়াকাটায় সাগর প্রচণ্ড উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। রাঙ্গাবালীর চরআন্ডায় বেড়িবাধের ভাঙ্গা অংশ থেকে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে পুরো চরটি। সেখানে একটি মাত্র আশ্রয় কেন্দ্র থাকায় চরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে, জোয়ারের প্রভাবে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় উপকুলের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। কলাপাড়ার লালুয়া চাড়িপাড়ার ভাঙ্গাবাধ দিয়ে রাবনাবাদ নদীর পানি প্রবেশ করে ১০ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন।
অপরদিকে, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা সড়কের কয়েকটি স্থানে বাতাসের তোড়ে গাছ উপড়ে পরেছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে আমন ফসলি ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা ও আধাপাকা ধানের গাছ পানিতে তলিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, রোববার ভোর ৫টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পশ্চিমবঙ্গ- সুন্দরবন সংলগ্নসহ খুলনা উপকূল অতিক্রম করে। এর আগে, ওই এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থাকায় শনিবার সাতটি উপকূলীয় জেলা- বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ভোলার প্রায় সাত লাথ ৬৪ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেন। সূত্র : ইউএনবি।