পেট্রোল বোমা কালচার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আবিষ্কৃত কালচার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘চরম মিথ্যাচার আওয়ামী লীগ সরকারে পদোন্নতির একমাত্র মাপকাঠি। আওয়ামী লীগে ব্যক্তির যোগ্যতা ও মেধার ইন্টিগ্রেটির কোনো বালাই নেই। আওয়ামী লীগের নেতাদের মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণে যেটি পাওয়া যায় তা হলো ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড, চরম মিথ্যাচার, অপরাধ করেও অনুশোচনাহীনতা, অগভীরতা, পরজীবীর মতো আচরণ, ব্যর্থতার দায়িত্ব নিতে অপরাগতা।’
রিজভী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী একবার মন্ত্রিত্ব খুইয়ে এবারে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন শুধুমাত্র অবান্তর, অবিরল, মিথ্যাচারের প্রতিভা প্রমাণ করে। বিএসএমএমইউ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ওই এলাকায় তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকার কথা। যেখানে সরকারি অনুমোদন ছাড়া কাকপক্ষীও ঢুকতে পারে না সেই বিএসএমএমইউতে বোমা সদৃশ্য বোতল উদ্ধারের ঘটনায় তথ্যমন্ত্রী এখন বিএনপির যোগসূত্র খুঁজছেন। এইজন্যই বলেছি যে, আওয়ামী নেতারা চরম মিথ্যাচার দিয়ে নিজেদের ষড়যন্ত্র ঢাকতে পারঙ্গম।’
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রীর তো ভুলে যাওয়ার কথা নয় শেরাটনের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে বিএনপির আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে সারা দেশে গাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলা কারা করেছিল। বিহঙ্গ গাড়িতে পেট্রোল হামলা কারা করেছিল যা পরবর্তীতে আওয়ামী নেতারাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ স্বীকারোক্তির কথাটা তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করলেন না কেন? এ ছাড়া নরসিংদী রোডের বিআরটিসি বাস আজিমপুরে নিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছিল কারা, এসব করেছিল যারা তারা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ও রাষ্ট্রযন্ত্র-যা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে পেট্রোল বোমা হামলায় যুবলীগ নেতারা কীভাবে আটক হয়েছিল, রাবিতে ছাত্রলীগের বোমা হামলার স্বীকারোক্তি কিভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেছিল। সুতরাং পেট্রোল বোমা কালচার আওয়ামী লীগের আবিষ্কৃত কালচার, সেটা তথ্যমন্ত্রী এড়িয়ে গেলেও দেশবাসী ঠিকই জানেন।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বিএসএমএমইউতে পেট্রোল বোমা সদৃশ্য বোতলও ক্ষমতাসীন মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এটা কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এটাও দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার। সুতরাং জনগণের ওপর জবরদস্তি করে মিথ্যা কথার মায়াজাল বিস্তার করা যায় না। মিডনাইট নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা হরণ, রক্তপাতের সংস্কৃতি চালু রেখে আওয়ামী নেতাদের প্রাত্যহিক জীবন থেকে সৌজন্যবোধ ও হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে।’
‘শুধু মে মাসের প্রথম আট দিনেই ৪১ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ জন মানুষ বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। হত্যা, ধর্ষণের এহেন গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়ের সৃষ্টি হলেও সরকারের টনক নড়ে না। বরং ক্ষমতাসীনদের আস্কারাতেই ক্ষমতাসীনরা শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। তার একটি বড় প্রমাণ ফেনীর নুসরাত জাহানকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে মারার সাথে যারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে জড়িত তাদের একজন ফেনীর সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন। পরোয়ানা থাকার পরও ওই ওসি এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অতএব মন্ত্রীরা চাকরি রক্ষার বিবৃতি দিলেও দেশের অবস্থা ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক’ বলেও যোগ করেন রিজভী।