চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের প্রতি জামায়াতের আস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বাধ্য করতে চাই না। তিনি আমাদের প্রতিপক্ষ নন, তিনি সরকারের অভিভাবক। আমাদের সবার দায়িত্ব তাকে সহযোগিতা করা।’
আজ শনিবার সকালে মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘পূর্বে নির্বাচনের নামে তামাশা করা হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মানুষকে ভোটবিমুখ করা হয়েছে। তাই এমন একটি নির্বাচন করতে হবে, যেখানে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।’
তিনি বলেন, ‘এ মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ হলে আগামী মাসেই নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া হোক। আর সংস্কারের নির্বাচনের রোডম্যাপ জনগণের সামনে তুলে ধরা হোক।’
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ঘটনায় আমরা বিচলিত না হলেও সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। এমন পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে বসে থাকতে পারে না। জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করতে হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে এ আহ্বান জানিয়েছি।আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।’
জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করা হোক। যেটা এখনো জনগণ দেখতে পাচ্ছে না।বিচার বিভাগ নির্ভুলভাবে দৃশ্যমান করা হোক, নিরপেক্ষভাবে করা হোক।’
মানবিক করিডোরের বিষয়ে তিনি বলেন,‘মানবিক করিডরের বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত। তাই জামায়াত চেয়েছে এটা নিয়ে যেন সরকার ভেবেচিন্তে অগ্রসর হয়। সরকারের উচিত সব পক্ষের সঙ্গে বসে যেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর দেশের বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ নির্ভর করে। এ ধরনের বিষয়ে সরকারের হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান।
সেনাবাহিনী বিতর্কিত হলে দেশের জন্য ক্ষতি হবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘কারও কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হোক সেটা চাই না। সেনাবাহিনীকে নিয়ে যেকোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
এ সময় অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্তবর্তী সরকারকে সমর্থন করার আহ্বান জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কারও ভুল বোঝাবুঝির জন্য আবারও এ জাতি যদি সংকটে পড়ে, তাহলে দায় কেউ এড়াতে পারবে না।’