বাজারে নতুন চাল আসায় দাম কিছুটা কমেছে। সরু চাল কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা দাম কমেছে। এতদিন যে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা ৭৬ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে মাঝারি ও মোটা চালের দাম কমেনি। এদিকে মৌসুমে চালের দাম কমার দিকে থাকলেও, বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ এখন প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সবজির দামও চড়তে শুরু করেছে। বেশিরভাগ সবজি ৬০ টাকার উপরে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে রশিদের মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন ৭৬ টাকা। মঞ্জুরের মিনিকেট ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন ৮৫ টাকায় নেমেছে। ডায়মন্ডের মিনিকেটের দামও কমেছে।
কারওয়ান বাজারের চাল বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন জানান, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ৫০ থেকে ১০০ টাকা কম পড়ছে। দু-একটি ব্র্যান্ডে আরেকটু বেশি কমেছে। ২৫ কেজি মিনিকেটের যে বস্তা আগে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০ টাকা ছিল, এখন তা ১ হাজার ৯০০ থেকে ১ হাজার ৯৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে নাজিরশাইল, মাঝারি আটাশ ও মোটা স্বর্ণা চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চাল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা এবং স্বর্ণা ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মৌসুমে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ। প্রায় মাসখানেক ধরে চড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ
খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। মাসের ব্যবধানে হিসাব করলে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তার আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলা শেষ। মজুদকারীরা পেঁয়াজ ধরে রাখছেন। এতেই দাম বাড়তে শুরু করেছে।
রাজধানীতে পেঁয়াজের বৃহত্তম পাইকারি বাজার শ্যামবাজারের মিতালী আড়তের পাইকারি বিক্রেতা কানাই সাহা বলেন, ক্ষেতের পেঁয়াজ ফুরাতেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে মজুদ করার কারণে সরবরাহে টান পড়ছে। আবার বাকি পেঁয়াজও বেশি দাম পাওয়ার আশায় অল্প করে ছাড়ছে অনেকে। এসব কারণে দাম চড়ছে।
এদিকে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম থাকায় সবজির বাজারও চড়া। ৬০ থেকে ৭০ টাকার নিচে তরিতরকারি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি কেজি করলা এখন ৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম জাতভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। বরবটি প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, পটোল ও ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। চিচিঙ্গার ৬০ টাকার নিচে মিলছে না। পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পাকা টমেটো ৪০ টাকা, শজনে ডাঁটা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি লাউ ৬০ টাকা এবং চালকুমড়া ৫০ টাকা।
মালিবাগ বাজারের খুচরা বিক্রেতা সোহেল বলেন, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখন পর্যন্ত বাড়েনি। তাই সবজির বাজার চড়া যাচ্ছে। শিগগিরই দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
সবজি কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ওসমান আলী বলেন, মাছ-মাংসের দাম বেশি হলে স্বল্প আয়ের মানুষ তরিতরকারিতে নির্ভর করে টিকে থাকে। এখন সে পরিস্থিতি নেই। রোজায় কমে মিললেও বর্তমানে সবজি কিনতে পকেটে টান পড়ছে। হিসাব করে কিনতে হচ্ছে। পেঁয়াজসহ অন্যান্য মসলার দামেও কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। রোজার পর বাজার-খরচের চাপ বেড়ে গেছে। টানাটানি করে কোনোরকমে সামাল দিতে হচ্ছে। এভাবে চলা যায় না।