স্বদেশ ডেস্ক:
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা শুধু একটি দলের ছিলেন না। গেরিলা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা এই বীর যোদ্ধাকে তাই শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় শহীদ মিনারে ঢল নেমেছে সর্বস্তরের মানুষের। শ্রদ্ধা জানাতে আসা লোকরও এমন অভিমতই ব্যক্ত করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, কর্মজীবীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ বৃহস্পতিবার জাতীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাকে।
হাতে তিনটি গোলাপ ফুল নিয়ে মায়ের সাথে শ্রদ্ধা জানাতে আসা ১১ বছরের বালক জুনায়েদ হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘গেরিলা বাহিনীকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি।’ চানখারপুল এলাকার বাসিন্দা জুনায়েদ। মায়ের কাছে শুনেছেন একাত্তরে গেরিলা যুদ্ধ করে খোকা প্রিয় মাতৃভূমিকে মুক্ত করেছেন।
জুনায়েদের মা সাবেকুন নহার বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলের কোনো নেতাকর্মী না। উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাই আমার সন্তান তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে।
মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো: ফয়সাল বলেন, সাদেক হোসেন খোকা একজন বিপ্লবী নেতা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রণাঙ্গনে তিনি গেরিলা যুদ্ধ করেছেন। তাই তার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়সাল বলেন, না আমি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নই।
রাজধানীর ডেমরা থেকে আসা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সদস্য সোনিয়া আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই প্রতিবেদকে বলেন, আমি বর্তমানে গৃহিণী। রাজনীতিতে সক্রিয় নেই বহুদিন। সাদেক হোসেন খোকা জাতির বীর সন্তান ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে তার কাছ থেকে পিতৃস্নেহ পেয়েছি। তিনি ছিলেন একজন সৎ ও আদর্শবান রাজনীতিবীদ। তার মতো নেতার মৃত্যু জাতীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
বনশ্রী থেকে এসেছেন মুনির। পেশায় লেগুনা ড্রাইভার। ‘কেন এসেছেন?’ প্রশ্ন শুনে বলেন, আমি তাকে ভালোবাসি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশকে স্বাধীন করার জন্য তিনি যে সাহসী ভুমিকা রেখেছেন সেই জায়গা থেকে সম্মান জানাতে এসেছি।
লালবাগের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুর রহমান কিংবা ৫৭ বছর বয়সী সালাউদ্দিন- সবাই মনে করেছেন যে দল মতের উর্ধ্বে উঠে এই বীর যোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। তাই তো ছুটে এসেছেন।
সালাউদ্দিন বলেন, সাদেক হোসেন খোকা একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি আধুনিক ঢাকার রুপকার ছিলেন। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।
হাতে একটি গোলাপ ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে এসেছেন মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুরের সুভাষ অধিকারী (৬০) বলেন, আমার স্ত্রী ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। আমার সৌভাগ্য যে শহীদ মিনারের কাছেই ছিলাম। তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিপ্লবী নেতা। তিনি বিক্রমপুরের অহংকার ছিলেন। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।