বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনজির লিটনের শরীরে বাসা বেঁধেছিল মরণব্যাধি ক্যান্সার। প্রায় এক বছর লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি।
শুক্রবার ভোরে নীলফামারী জেলার ডিমলার আলাশপুরী গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন লিটন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা লিটনের বাবা মাহাবুর রহমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর মরণব্যাধি মেলানোমা ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম জানতে পারেন আনজির লিটন। তার ক্যানসার ধরা পড়ে শেষ পর্যায়ে এসে। মৃত্যুর দুয়ারে কড়া নাড়া লিটন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ভারতের ব্যাঙ্গালোর মজুমদার শাহ ক্যান্সার হাসপাতালে। গত ৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। ৬টা কেমোথেরাপি দেয়ার কথা ছিল তারমধ্যে দুইটা দেয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে ছিলেন তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। অবশেষে শুক্রবার ভোরে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান লিটন। ছেলেকে হারিয়ে তার বাবা-মা পাগল প্রায়। শোক ছড়িয়ে পড়েছে বেরোবি ক্যাম্পাসজুড়েও। লিটনের এ মৃত্যু যেন মেনে নিতে পারছে না তার বন্ধু, শিক্ষক, ছোট ভাই এবং বড় ভাইয়েরা। তাই ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও শুক্রবার বাদ জুমা ক্যাম্পাসে তার জানাজায় শরীক হন অনেকেই। এ ছাড়া সন্ধ্যা তার গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন হবে।
গত বছরের ১১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএস ক্লাবের বাঁচা-মরা অনিশ্চিত জেনেও স্টেজে দাঁড়িয়ে গান গাইলেন ক্যানসার আক্রান্ত সেই আনজির লিটন। পরে ‘লিটন গাইলেন, বাকিরা কাঁদলেন’ শিরোনামে নিউজের সাথে সেই গানটি জাগো নিউজে প্রকাশ হলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। মৃত্যুর এত কাছে থেকেও এভাবে গান গাওয়া দেখে হতবাক হয় সবাই।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর ‘লিটনকে বাঁচাতে প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ। পরে তার অসুস্থতার বিষয়টি সবার নজরে আসে।