বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

আমরা বিএসএফ বা ভারতকে ছাড় দেব না: বিজিবি মহাপরিচালক

আমরা বিএসএফ বা ভারতকে ছাড় দেব না: বিজিবি মহাপরিচালক

স্বদেশ ডেস্ক:

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, ‘সীমান্তে পিঠ দেখাবে না বিজিবি। বিজিবির পক্ষ থেকে আশ্বাস নিশ্চিত করছি, সীমান্ত রক্ষার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। নিয়মনীতির বাইরে আমরা বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) বা ভারতকে ছাড় দেব না।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতের অবস্থান আসলে কী— জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আমি সীমান্ত ও বিজিবির প্রেক্ষাপট থেকে বলতে পারি, সীমান্তে যারা মাইনোরিটি (সংখ্যালঘু) আছে তারা চলে যেতে পারে- এই ধরনের অপপ্রচার অতিরঞ্জিতভাবে প্রচার করা হচ্ছিল। সেসময় বিএসএফ তাদের ক্যাম্পগুলোতে জনবল বাড়িয়েছে। তাদের অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সে সময়ে আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর গাড়ির মুভমেন্ট (চলাফেরা) পর্যন্ত দেখেছি, যেখানে তাদের আসার কথা না।’

তিনি বলেন, ‘হয়তো তারা শঙ্কায় ছিল যে বড় সংখ্যক একটা অংশ ভারতে যায় কি না। আমরা এটার লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ করেছি। পরবর্তীতে ডিজিপর্যায়ে বিএসএফের সঙ্গে যে মিটিং হবে সেখানে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে ভারতবিরোধী মনোভাব আরও বেড়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা আর সীমান্তে পিঠ দেখাব না।’ এর মধ্যে বিএসএফ সদস্যকেও আটক করেছে বিজিবি। বিষয়গুলোকে বিজিবি সার্বিকভাবে কীভাবে নিচ্ছে— জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘বিএসএফ সদস্য একজন কৃষককে ধাওয়া করে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে। এই ক্ষেত্রে ওই বিএসএফ সদস্য ভুল স্বীকার করে তাহলে কিছু নিয়ম-নীতি আছে।’

তিনি বলেন, ‘সে (বিজিবির আটক সদস্য) কোনো ধরনের ক্ষতিসাধন করবে না মর্মে জানায় তাহলে বিওপি পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে ফেরত দেওয়ার বিধান রয়েছে, কিন্তু বিষয়টি আমি সিরিয়াসলি নিয়েছি। কারণ, কিছুদিন আগে কুলাউড়ায় স্বর্ণা দাস, ঠাকুরগাঁওয়ে জয়ন্ত মারা গিয়েছেন, যারা সাবালক নয়। তাহলে তাদের হত্যা করতে হবে কেন? তারা তো নিরস্ত্রও ছিল।’

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘এ দুটি ঘটনার পরই ওই বিএসএফ সদস্য ঢুকে পড়লে আমরা তাকে আটক করি। আমরা বলেছি বিওপি পর্যায়ের বৈঠক ছাড়া আমরা ফেরত দেব না। ব্যাটালিয়ন পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাবেও আমরা বলেছি হবে না, সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক করে তাকে ফেরত দিয়েছি। লিখিত দিয়েছে যে বাকি জীবনে আর এ ধরনের কাজ করবে না, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পরদিন কিছু হিন্দু পত্রিকায় লেখা হয় যে, বাংলাদেশি কৃষক নিরস্ত্র অবস্থায় বিএসএফ সদস্যকে পেয়ে ধরে নিয়ে আসছে। সেটা নিয়ে আমাদের দেশে কোনো প্রতিবাদী খবর হয়নি। আমরাই প্রতিবাদ পাঠিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সীমান্তে পিঠ দেখাব না। আগে এ ধরনের ঘটনায় নানা ক্লিয়ারেন্স (ছাড়পত্র) নিয়ে কাজ করা লাগত। এখন আমি সরাসরি কাজ করতে পারছি। তবে অফিসিয়ালি পেশাদার একটা সম্পর্ক বিএসএফের সঙ্গে রাখতে হবে। সেটা রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে কোনোকিছুতে কম্প্রোমাইজ (ছাড় দিয়ে) করে নিজেরা ছাড় দিয়ে সীমান্তে কিছু হবে না। কারণ, বিএসএফের চাইতে বিজিবি কোনো অংশে কম নয়।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877