স্বদেশ ডেস্ক:
চেন্নাই টেস্টে ভারতের বিপক্ষে বোলিংয়ে দুর্দান্ত শুরু এনেও সেটি ধরে রাখা যায়নি। ৩৭৬ রানের বড় স্কোর গড়েছে রোহিত শর্মার দল। ব্যাটিংয়ে নেমে আরও হযবরল অবস্থা বাংলাদেশের। ভারতীয় পেসারদের তোপে মাত্র ১৪৯ রানে অলআউট হয় নাজমুল হাসান শান্তর দল। ২২৭ রানে এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশকে ফলোঅনে না পাঠিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। ৩ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান তুলে দিন শেষ করেছে তারা। ফলে তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩০৮ রান।
আজ শুক্রবার আগের দিনের ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামে ভারত। দ্বিতীয় দিনের সকালে গতি ও সুইংয়ের ঝড় দেখান বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। তাতে দিনের প্রথম সেশনের মাঝপথেই ৩৭৬ রানে গুটিয়ে যায়। দিনের শুরুতে দলের সঙ্গে ৪ রান যোগ হতেই জাদেজাকে সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন। সেঞ্চুরির দিকে হাঁটতে থাকা জাদেজা ১২৪ বলে ৮৬ রান করে ফেরত যান প্যাভিলিয়নে। জাদেজার পর আকাশ দিপকে নিজের শিকারে পরিণত করেন তাসকিন। বলে বড় শট খেলার চেষ্টায় মিড অফে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন এই পেসার। যাওয়ার আগে ৩০ বলে ১৭ রান করেন তিনি।
এদিকে এক প্রান্ত আগলে রাখেন অশ্বিন। দ্বিতীয় দিনের ১১তম ওভারে তাসকিনের হাতে আবারও বল তুলে দেন অধিনায়ক শান্ত। ওভারে পঞ্চম ওভারে অশ্বিনকে ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলেন এই টাইগার পেসার। ১৩৩ বলে ১১৩ রান করেন অশ্বিন। পরের ওভারে বুমরাহকে (৭) আউট করেন হাসান মাহমুদ। এতে ৩৭৬ রানে অলআউট হয় ভারত।
৮৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার হাসান। ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। এছাড়া নাহিদ রানা ও মেহেদী হহাসান মিরাজ একটি করে উইকেট পান।
প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে শুরুতেই জাসপ্রিত বুমরাহর তোপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই সাদমান ইসলামকে সরাসরি বোল্ড করে দেন এই পেসার। এরপর ৮ ওভার পর্যন্ত আর কোনো উইকেট না পড়লেও ধস শুরু হয় আরেক পেসার আকাশ দীপ বোলিংয়ে এলে। নবম ওভারে প্রথমবারের মতো ইনিংসে বলে এসেই জাকির হাসানকে বোল্ড করেন তিনি। গুড লেন্থে পড়া বল ইনসুইং করে সরাসরি আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। একই রকম বলে বোল্ড হন চারে নামা মুমিনুল হকও। এরপর শান্তর সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিক।
দলের সঙ্গে আর ১৪ রান যোগ হতেই ফেরেন অধিনায়ক শান্ত। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় ২০ রান করে আউট হন তিনি। ৪০ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিম ফিরলে চরম বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ২২ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটি ৫ উইকেট হারায় ৪০ রানের মধ্যে। এরপর জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বিপদ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন সাকিব ও লিটন। দলীয় ৯১ রানে রবীন্দ্র জাদেজার বলে ধ্রুব জুরেলের ক্যাচ হয়ে ফেরেন লিটন। ৪২ বলে ২২ রান আসে এই উইকেটকিপার ব্যাটারের ব্যাটে। এরপর মাঠে নামেন মিরাজ। দলের সঙ্গে এক রান যোগ হতে বিদায় নেন সাকিবও। এবারও শিকারি সেই জাদেজা। দারুণ খেলতে থাকা সাকিব ৬৪ বলে ৩২ রান করে আউট হয়েছেন।
৯২ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারানো দল ১৪৯ পর্যন্ত করে শেষের ব্যাটারদের ছোট ছোট অবদানে। আটে নেমে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। হাসান মাহমুদ ৯ রান করলেও তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা আউট হন ১১ রান করে। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন বুমরাহ। আজকের এই বোলিংয়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটও হয়ে গেল তার। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আকাশ দীপ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবীন্দ্র জাদেজা।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আজও সুবিধা করতে পারেননি রোহিত শর্মা। ৫ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। আগের ইনিংসে ফিফটি পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল এদিন ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। গত ইনিংসের মতো এই ইনিংসেও তাকে শিকার করেন দ্রুতগতির পেসার নাহিদ রান। রান পাননি বিরাট কোহলিও। এবার মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেট দিয়ে আসার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। শেষ পর্যন্ত শুভমান গিল ৩৩ রানে ও ঋশাভ পান্ত ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন।